বেতন বৃদ্ধিসহ নানা দাবিতে কেবিন ক্রুদের ডাকা ধর্মঘটের জেরে কানাডার জাতীয় উড়োজাহাজ সংস্থা এয়ার কানাডা তাদের সব ফ্লাইট সাময়িকভাবে স্থগিত ঘোষণা করেছে। ফলে প্রতিদিন প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার যাত্রীকে ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে।
ধর্মঘটের আওতায় এয়ার কানাডার সহযোগী বাজেট সংস্থা এয়ার কানাডা রুজ-এর ফ্লাইটগুলোও পড়েছে। তবে এয়ার কানাডা জ্যাজ, এয়ার কানাডা এক্সপ্রেস, এবং পিএএল এয়ারলাইনস-এর ফ্লাইটগুলো এই ধর্মঘটে প্রভাবিত হবে না বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
শনিবার (১৬ আগস্ট) স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৫৮ মিনিটে ধর্মঘট শুরু হলেও, তার আগেই এয়ার কানাডা ফ্লাইট পরিচালনা সীমিত করে দেয়। কোম্পানির ভাষ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন গড়ে ৫০০টির বেশি ফ্লাইট এই ধর্মঘটে বাতিল হচ্ছে।
কেবিন ক্রুরা দাবি করছেন, শুধু ফ্লাইট চলাকালে নয়, বরং যাত্রী ওঠানামা, প্রস্তুতির সময় কিংবা বিমানের ভেতর যাত্রী সহায়তার সময়ও বেতন দেওয়া উচিত। বর্তমানে এসব সময়ের জন্য তারা কোনো পারিশ্রমিক পান না।
শ্রমিক সংগঠন কানাডিয়ান ইউনিয়ন অব পাবলিক এমপ্লিয়েজ (CUPE) জানিয়েছে, এয়ার কানাডার চার বছরের চুক্তিপত্রে প্রস্তাবিত ৩৮ শতাংশ বেতন বৃদ্ধিও বাজারদর ও ন্যূনতম মজুরির তুলনায় অপ্রতুল। তাদের মতে, এই প্রস্তাব কর্মীদের বাস্তব সমস্যার সমাধান করে না।
চলতি মাসের শুরুতে ইউনিয়নের ৯৯.৭ শতাংশ সদস্য ধর্মঘটের পক্ষে ভোট দেন, যা থেকেই স্পষ্ট হয় শ্রমিক অসন্তোষের গভীরতা।
কানাডার কর্মসংস্থানমন্ত্রী প্যাটি হাজডু এক বিবৃতিতে এয়ার কানাডা ও শ্রমিক সংগঠনকে আবারও আলোচনায় ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি জানান, এয়ার কানাডা মধ্যস্থতা বা সালিসির জন্য সরকারের সহায়তা চেয়েছে। তবে ইউনিয়নের অভিযোগ, তারা আট মাস ধরে আন্তরিক আলোচনায় ছিল, অথচ এয়ার কানাডা একতরফাভাবে সরকারের নির্ধারিত সালিসি প্রক্রিয়ায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ভুক্তভোগী যাত্রীদের উদ্দেশে এয়ার কানাডা পরামর্শ দিয়েছে, বিকল্প কোনো এয়ারলাইনসের সঙ্গে যোগাযোগ না করে সরাসরি বিমানবন্দরে না যেতে। পাশাপাশি সাময়িক এ অসুবিধার জন্য যাত্রীদের কাছে দুঃখ প্রকাশও করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
বিশ্বের ১৮০টিরও বেশি শহরে ফ্লাইট পরিচালনাকারী এয়ার কানাডার এই সংকট কেবল দেশের অভ্যন্তরে নয়, আন্তর্জাতিক যাতায়াতেও বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/মুসা