গত ২১ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় ডোনেটস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলকে আলাদা স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রুশ ভাষাভাষী অধ্যুষিত এই দুটি অঞ্চল একত্রে ‘ডোনবাস’ নামে পরিচিত।
স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির পর অঞ্চল দুটিকে বেসামরিকীকরণের লক্ষ্যে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। এরই মধ্যে শুক্রবার ৫১তম দিনে গড়িয়েছে এই সামরিক অভিযান। এই সময়ে ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি শহর দখলে নিয়েছে রুশ বাহিনী। তবে নিজেদের সাধ্যমতো প্রতিরোধীও গড়ে তোলার চেষ্টা করছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। ফলে রাজধানী কিয়েভ ও এর আশেপাশের এলাকা এবং চেরনিহিভ থেকে পিছু হঁটতে বাধ্য হয় রুশ বাহিনী। এদিকে, আমেরিকা ও ইউরোপী ইউনিয়নের দেশগুলো এই অভিযানকে ‘পুতিনের ভূমি জবরদখল’ বলে আখ্যা দিয়েছে।
এদিকে, যুদ্ধের মাঝেই বেশ দিন কোনও খোঁজখবর পাওয়া যাচ্ছিল না রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগুর। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে গুঞ্জন উঠেছে, বড় ধরনের ‘হার্ট অ্যাটাক’ হয়েছিল তার। তবে তিনি স্বাভাবিক কারণে অসুস্থ হননি। এর পিছনে রয়েছে অন্য কারণ।
রাশিয়া-ইসরায়েলি এক ব্যবসায়ীর দাবির বরাত দিয়ে এ ধরনের এ তথ্য তুলে ধরেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম ‘ডেইলি মেইল অনলাইন’।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসলে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত তেমন সেভাবে সফল নয় রাশিয়া। যুদ্ধের দেড় মাসের বেশি সময় পেরিয়েও কবজায় আনা যায়নি কিয়েভকে। এই কারণেই পুতিনের সঙ্গে নাকি সম্পর্কে ফাটল ধরেছে তার ঘনিষ্ঠ সেনানায়ক ও পরামর্শদাতাদের। মনে করা হচ্ছে, পরিস্থিতির চাপেই নাকি এই অবস্থা রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর।
তবে শোইগুর হার্ট অ্যাটাকের বিষয়টি নিয়ে রুশ কর্তৃপক্ষের কোনও উদ্ধৃতি দিতে পারেনি ডেইলি মেইল।
এমতাবস্থায় রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সত্যিই ‘হার্ট অ্যাটাকের’ শিকার হয়েছেন কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে অনেকের মনে। কেউ কেউ এটিকে কেবলই গুঞ্জন মনে করছেন।
উল্লেখ্য, ২০১২ সাল থেকেই পুতিনের সঙ্গে সুসম্পর্ক শোইগুর। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলেছে। এক রুশ-ইসরায়েলি ওই ব্যবসায়ীর দাবি, পুতিনের সঙ্গে এই মুহূর্তে সম্পর্ক একেবারেই ভাল নেই তার ঘনিষ্ঠদের। তাদের মধ্যে রয়েছেন শোইগু নিজেও।
দেড় মাস পেরিয়ে দু’মাস হতে চলল রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের যুদ্ধের। এখনও নিষ্পত্তি হয়নি সেই লড়াইয়ের। এই পরিস্থিতিতে চাপ বেড়েছে পুতিনের উপর।
এদিকে, সুইডেন ও ফিনল্যান্ড ন্যাটো সামরিক জোটে যোগ দিতে পারে এই সম্ভাবনা তৈরি হওয়াও ভাবাচ্ছে রাশিয়াকে। মস্কো জানিয়েছে, ওই দুই দেশ যদি ন্যাটোয় যোগ দেয় তাহলে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করবে রাশিয়া। সেই সঙ্গে বাল্টিক সাগরে স্থল, নৌ ও বিমানবাহিনীকে আরও শক্তিশালী করতে হবে বলেও সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। সূত্র: ডেইলি মেইল
বিডি প্রতিদিন/কালাম