রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার সব সম্ভাবনা নাকচ করে দিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। দেশটির চার অঞ্চলের জনগণ রুশ ফেডারেশনে যুক্ত হওয়ার পক্ষে ব্যাপকভাবে ভোট দেওয়ার পর জাতিসংঘে ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।
মঙ্গলবার রাতে ভিডিও কলের মাধ্যমে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ভাষণ দেন জেলেনস্কি।
তিনি বলেন, “ভুয়া গণভোটের মাধ্যমে ইউক্রেনের ভূমি জবরদখলের লক্ষ্যে ক্রিমিয়া নাটকের যে পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে তারপর আর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট [ভ্লাদিমির পুতিনের] সঙ্গে আলোচনার প্রশ্নই ওঠে না।”
রুশ-অধিকৃত চার অঞ্চলে গত ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত গণভোটকে ‘ভুয়া’ বলে মন্তব্য করেছে কিয়েভ ও পশ্চিমা মিত্ররা।
জেলেনস্কি আরও বলেন, “গোটা বিশ্বের চোখের সামনে রাশিয়া নিজের অধিকৃত অঞ্চলগুলোতে গণভোট নামক একটি নির্লজ্জ প্রহসন মঞ্চস্থ করেছে।”
তবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন এক টেলিভিশন ভাষণে বলেছেন, ওই চার অঞ্চলের জাতিগত রুশ ও রুশ ভাষাভাষি জনগণের ওপর ইউক্রেন সরকারের দমনপীড়নের অবসান ঘটানোর জন্য এ গণভোটের আয়োজন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, রাশিয়ার সঙ্গে একীভূত হতে গত ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইউক্রেনের চার অঞ্চলে ‘গণভোট’ অনুষ্ঠিত হয়। ওই চার অঞ্চল হলো- ডোনেটস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝঝিয়া ও খেরসন।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করে রাশিয়া। এরপর দেশটির বেশ কয়েকটি অঞ্চল দখলে নিয়ে নেয় রুশ সেনারা। এই চার অঞ্চল দখলকৃত অঞ্চলগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই চার অঞ্চলের আয়তন ইউক্রেনের গোটা ভূখণ্ডের প্রায় ১৫ শতাংশ।
এদিকে, এই চার অঞ্চলের গণভোটে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পক্ষে ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছে রাশিয়ার নিয়োগ দেওয়া প্রশাসন। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
তবে ইউক্রেন ও দেশটির মিত্র পশ্চিমা দেশগুলো এই গণভোটকে প্রহসন আখ্যা দিয়েছে।
লুহানস্ক কর্তৃপক্ষের দাবি, ৯৮ দশমিক ৪ শতাংশ ভোটার রাশিয়ায় যুক্ত হওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছেন। জাপোরিছঝঝিয়ায় রাশিয়ার নিয়োগ করা প্রশাসন জানিয়েছে, রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পক্ষে ৯৩ দশমিক ১ শতাংশ ভোটার।
খেরসনে ভোটগ্রহণ কমিটির প্রধান বলেছেন, রাশিয়ায় যুক্ত হওয়ার পক্ষে ভোট পড়েছে প্রায় ৮৭ শতাংশ। স্বঘোষিত ডোনেটস্ক পিপলস রিপাবলিকের প্রধান ডেনিস পুশিলিন বলেছেন, ওই অঞ্চলের ৯৯ দশমিক ২ শতাংশ ভোটারই রাশিয়ায় যোগ দেওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছেন। সূত্র: ইউক্রেনের পেসিডেন্টের ওয়েবসাইট, রয়টার্স, ফিন্যান্সিয়াল টাইমস, ডয়েচে ভেলে
বিডি প্রতিদিন/কালাম