সৌদি আরবের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়তে মরিয়া ইসরায়েল। এজন্য বহুদিন ধরেই চেষ্টা চালাচ্ছিল দেশটি। কিন্তু এক্ষেত্রে সবসময় বাঁধা হয়ে দাঁড়াতো ফিলিস্তিন। তবে এবার পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। ধারণা করা হচ্ছে, সৌদি আরবের প্রস্তাবিত অর্থের বিনিময়ে ইসরায়েল-সৌদির কূটনেতিক সম্পর্ক গড়ার বিষয়ে এবার নমনীয় হতে পারে ফিলিস্তিন।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে বুধবার সৌদি আরবের উচ্চপদস্থ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিল ফিলিস্তিনের শাসক দল প্যালিস্টিনিয়ান অথরিটির (পিএ) প্রতিনিধি দল। তারা এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের সঙ্গেও বৈঠকে বসবে।
তবে সৌদির সঙ্গে ইসরায়েলের কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ার ক্ষেত্রে কিছু শর্ত জুড়ে দিয়েছে ফিলিস্তিন। তারা বলেছে, বিপুল পরিমাণ অর্থের পাশাপাশি অধিকৃত পশ্চিম তীরের ওপর তাদের আরও নিয়ন্ত্রণ দিতে হবে।
সৌদি-ইসরায়েলের মধ্যে সম্পর্ক গড়তে দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। এর অংশ হিসেবেই এ ব্যাপারে আলোচনায় বসেছে প্যালিস্টিনিয়ান অথরিটি।
ইসরায়েল-সৌদির সম্পর্কের বিষয়টি পুরোটি দেখভাল করবে যুক্তরাষ্ট্র। তারাই সবকিছু করবে। এর বদলে মার্কিনিদের সঙ্গে নিরাপত্তা বিষয়ক চুক্তি করতে পারবে সৌদি আরব। তবে এটি যে এখনই হয়ে যাবে— এমন সম্ভাবনা কম। তাছাড়া বিষয়টি বাস্তবে রূপ নিতেও অনেক সময় লাগতে পারে।
তবে সৌদি আরব-ইসরায়েলের মধ্যে যদি কোনও চুক্তি হয় তাহলে এ বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জন্— আগামী নির্বাচনে আগে একটি বড় বিজয় হিসেবে বিবেচিত হবে।
১৯৪৮ সালে ইসরায়েলের জন্ম হয়। তবে আরব ও মুসলিম বিশ্বের নেতা হিসেবে বিবেচিত সৌদি আরব কখনও ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়নি। ফলে এখন যদি ইসরায়েলের সঙ্গে রিয়াদ এ ধরনের সম্পর্ক স্থাপন করে তাহলে এটি ‘বিতর্কিত’ একটি বিষয় হবে।
জানা গেছে, ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সব সর্বাধুনিক অস্ত্র, একটি বেসামরিক পারমাণবিক চুক্তি এবং অভ্যন্তরীণভাবে ইউরেনিয়াম মজুদের দাবি করেছে সৌদি আরব।
২০২০ সালে আব্রাহাম চুক্তির মাধ্যমে চারটি মুসলিম দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে ইসরায়েল। এরপর আরও মুসলিম দেশের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে তৎপরতা চালাচ্ছে তারা।
তবে সৌদির সঙ্গে চুক্তি করতে হলে ফিলিস্তিনিদের অনেক ছাড় দিতে হবে ইসরায়েলকে।
এছাড়া এ চুক্তির ক্ষেত্রে বাঁধা হতে পারেন সৌদির সাধারণ মানুষই। কারণ ঐতিহাসিকভাবে তারা ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংবেদনশীল। ফলে সৌদির ক্রাউন্স প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে নিজ দেশের মানুষকে আগে আশ্বস্ত করতে হবে। সূত্র: বিবিসি
বিডি প্রতিদিন/কালাম