দীর্ঘ জল্পনা অবসান ঘটিয়ে অবশেষে লোকসভা নির্বাচনে ভারতের উত্তরপ্রদেশের রায়বরেলি থেকে ভোটে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাহুল গান্ধী। ইতোমধ্যেই তিনি কেরালার ওয়ানাড় থেকে ভোটে লড়েছেন। আর এবার তিনি উত্তরপ্রদেশের রায়বরেলি থেকে লড়বেন।
শুক্রবার সকালেই কংগ্রেসের পক্ষ থেকে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল আমেথি এবং রায়বরেলির জন্য। তখনই নিশ্চিত হয় যে রাহুল রায়বরেলি থেকে লড়বেন। সেই মতো আজ তিনি মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন মা সোনিয়া গান্ধী এবং বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী।
এর আগে মনে করা হয়েছিল সোনিয়ার ছেড়ে যাওয়া রায়বরেলি থেকে লড়তে পারেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। তবে কংগ্রেস নেতৃত্বের অনুরোধ সত্ত্বেও নাকি নির্বাচনি ময়দানে নামতে চাননি প্রিয়াঙ্কা। এদিকে, প্রিয়াঙ্কার স্বামী রবার্ট বঢরা নিজে আমেথি থেকে লড়াই করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন।
এর আগে ২০০৪, ২০০৯, ২০১৪ সালে টানা তিনবার আমেথি আসন থেকে জিতে ছিলেন রাহুল গান্ধী। তবে ২০১৯ সালে আমেথি থেকে হেরে যান রাহুল। এই আসন থেকে জিতে ছিলেন বিজেপির স্মৃতি ইরানি। তবে সেবার কেরালার ওয়ানাড় থেকেও ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন রাহুল। সেখান থেকে জিতে লোকসভায় পা রেখেছিলেন তিনি। এবারও ওয়ানাড় থেকে ভোটে লড়ছেন রাহুল গান্ধী। ইতোমধ্যেই তিনি সেখানে নিজের মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। এর পাশাপাশি এবার রায়বরেলি থেকে লড়তে চলেছেন রাহুল গান্ধী।
এবার উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে জোট বেঁধেছে কংগ্রেস। আমেথি আসনটি কংগ্রেসকেই ছেড়ে দিয়েছে অখিলেশের দল।
রিপোর্টে দাবি করা হয়, অখিলেশ চেয়েছিলেন রাহুল যাতে আমেথি থেকে লড়াই করেন। তবে রাহুল তাতে রাজি হননি। তবে মায়ের রায়বরেলি আসনে লড়তে রাজি হয়েছেন রাহুল।
প্রসঙ্গত, গতবার আমেথি থেকে স্মৃতি ইরানি ৪৯.৭১ শতাংশ ভোট পান। আর রাহুল গান্ধী পেয়েছিলেন ৪৩.৮৪ শতাংশ ভোট। এর আগে ২০১৪ সালে রাহুলের বিরুদ্ধে এই আসনে বিজেপির হয়ে লড়েছিলেন স্মৃতি ইরানি। তবে সেবার তিনি হেরে যান। সেবার রাহুল পেয়েছিলেন ৪৬.৭১ শতাংশ ভোট। আর স্মৃতি পেয়েছিলেন মাত্র ৩৪.৩৮ শতাংশ ভোট। তার আগে ২০০৯ সালে এই আসন থেকে রাহুল পেয়েছিলেন ৭১.৭৮ শতাংশ ভোট। আর ২০০৪ সালে রাহুল পেয়েছিলেন ৬৬.১৮ শতাংশ ভোট। এই দুই নির্বাচনেই আমেথি আসন থেকে বিজেপি ছিল তৃতীয় স্থানে।
এদিকে, রায়বরেলি আসন থেকে অতীতে ফিরোজ গান্ধী, ইন্দিরা গান্ধীরা সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৫২ সাল থেকে এই আসনে মাত্র তিনবার হেরেছে কংগ্রেস-১৯৭৭, ১৯৯৬ এবং ১৯৯৮ সালে। ২০০৪ থেকে টানা এই আসনে জিতে এসেছেন সোনিয়া গান্ধী। এই লোকসভা আসনের অধীনে থাকা পাঁচটি বিধানসভা কেন্দ্রে গতবার জয়ী হয়েছিল সমাজবাদী পার্টি। মাত্র একটি আসনে জিতেছিল বিজেপি।
ভারতে চলমান লোকসভা নির্বাচনের পঞ্চম ধাপের ভোটগ্রহণ ২০ মে। এবারের লোকসভা নির্বাচনে উত্তর প্রদেশের ৮০টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস এককভাবে লড়ছে মাত্র ১৭টি আসনে। বাকি আসন অর্থাৎ ৬৩টি আসনে লড়ছে উত্তর প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবের দল ও কংগ্রেসের জোটসঙ্গী সমাজবাদী পার্টি।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত