ইসরায়েলি বর্ববরতা যেন সবকিছুকেই ছাড়িয়ে যাচ্ছে। গাজায় অন্ধকার যুগের মতো ভয়ংকর আচরণ করছে তারা। কয়েকদিন আগেই ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নির্মমতার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। যেখানে দেখা যায় চলন্ত জিপের সাথে বেঁধে রক্তাক্ত অবস্থায় দুই ফিলিস্তিনিকে অর্ধনগ্ন করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
গত সপ্তাহে ভাইরাল হওয়া সেই ভিডিও নিয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, আহত ফিলিস্তিনিকে এভাবে গাড়ির সামনে বেঁধে রেখে তাদের সেনারা প্রটোকল ভেঙেছে। তাদের দাবি ছিল, এমন কর্মকাণ্ডকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সমর্থন করে না। সেই সাথে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণাও দিয়েছিল তারা।
এই ঘটনার পর পশ্চিম তীরে বসবাস করা আরও ফিলিস্তিনিরা মুখ খুলতে শুরু করেছেন। ইসরায়েলি আগ্রাসনের শিকার দুই ফিলিস্তিনি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে নিজেদের রোমহর্ষক অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। তারাও বলেছেন, তাদেরকেও জিপের বনেটের ওপর জোর করে তুলে দিয়েছিল ইসরায়েলি সেনারা। এরপর তারা জিপটি একটি গ্রামের রাস্তা ধরে চালিয়ে নিয়ে যায়।
ওই দুই তরুণ বিবিসিকে একই অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হওয়ার কথা বলেছেন। ২৫ বছর বয়সী সামির দাবায়াও গত সপ্তাহে জেনিনের জাবারিয়াত এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্মমতার শিকার হন। সেই অভিযানের সময় পিঠে গুলিবিদ্ধ হন সামির, রক্তাক্ত অবস্থায় কয়েক ঘণ্টা মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকেন। এরপর তার প্রাণ আছে দেখে ইসরায়েলি সেনারা তাকে আবারও বন্দুক দিয়ে আঘাত করেন। এরপর সামিরকে জিপের ওপর ছুড়ে ফেলা হয়।
সামিরের দাবি, তার ট্রাউজারও খুলে নেয় ইসরায়েলি সেনারা। এরপর তাকে নিয়েই চালানো হয় গাড়ি। বিবিসিকে সেই ঘটনার ভিডিও দেখান সামির। নিরাপত্তা ক্যামেরায় ধারণ করা ভিডিওতে সামিরকে অর্ধনগ্ন অবস্থায় দ্রুতগতিতে চলা ইসরায়েলি জিপের ওপর শুয়ে থাকতে দেখা যায়।
আরেক ফিলিস্তিনি হিশাম ইসলেইত। তিনি বিবিসিকে বলেন, জাবারিয়াতে অভিযানের সময় তিনি দুবার গুলিবদ্ধ হয়েছেন। একই ধরনের একটি সামরিক জিপ, যেটিতে ‘ওয়ান’ লেখা আছে, তাঁকে সেটির ওপর জোর করে তোলা হয়েছিল।
হিশামও বলেছেন, ইসরায়েলি সেনারা তার পোশাকও খুলে নিয়েছিল। তাকেও জিপের বনেটের ওপর চড়ানো হয়।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বিবিসিকে জানিয়েছে, তারা ঘটনাগুলো খতিয়ে দেখছে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল
