রাশিয়া ইউক্রেনের ভেতরে ঢুকে হামলা শুরু করার পর, রুশ বাহিনীও পাল্টা আঘাত হানছে। সোমবার ভোরে রাশিয়ার তরফ থেকে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে, যার লক্ষ্য ছিল ইউক্রেনের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি অবকাঠামো। ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্যামিহাল জানিয়েছেন, ১৫টি অঞ্চলে রাশিয়া বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করে এ হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ড্রোন, ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, এবং সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র কিনজাল।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই হামলার ভয়াবহতা স্বীকার করেছেন। তার ভাষ্যমতে, রাশিয়া প্রায় ১০০টি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ১০০টি ড্রোন ব্যবহার করেছে ইউক্রেনের ওপর হামলার জন্য। কিয়েভসহ অন্যান্য শহরগুলোর ওপর কয়েক দফায় এই হামলা চালানো হয়, যার ফলে রাজধানীসহ অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। কিয়েভের বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে মেট্রো স্টেশনগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন।
ইউক্রেন দাবি করেছে, তারা রাশিয়ার ৩০টি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়েছে। যদিও বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল দুপুর পর্যন্ত রুশ ড্রোন হামলা অব্যাহত ছিল, এবং লোকজনকে আবারও নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য সতর্ক করা হয়।
এই হামলাকে রাশিয়ার অন্যতম বড় সমন্বিত আক্রমণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। ইউক্রেনের জ্বালানিমন্ত্রী জার্মান গালুশচেঙ্কো এই মুহূর্তের পরিস্থিতিকে অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং বলে উল্লেখ করেছেন। ইউক্রেনের জাপোরিঝঝিয়া, রিভনে এবং লিভ অঞ্চলে বিদ্যুৎ অবকাঠামোতে হামলা হয়েছে, এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, লুটস্ক শহরে একটি আবাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পোল্যান্ড সীমান্তের কাছাকাছি রুশ যুদ্ধবিমান দেখা যাওয়ার পর, পোল্যান্ডও নিজেদের যুদ্ধবিমান ওড়ায়। ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা পশ্চিমা মিত্রদের কাছে রাশিয়ার এ হামলার পাল্টা জবাব দেওয়ার অনুমতি চেয়েছেন এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।
রাশিয়ার পক্ষ থেকে কিয়েভে চালানো এই সমন্বিত আক্রমণ ইউক্রেনের জন্য একটি গুরুতর সংকট তৈরি করেছে, এবং প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি পশ্চিমা দেশগুলোকে অবিলম্বে সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছেন।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল