যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দুই প্রধান প্রার্থী, বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, সরাসরি বিতর্কে অংশ নিয়েছেন। মঙ্গলবার রাত ৯টায় (বাংলাদেশ সময় বুধবার সকাল ৭টায়) এবিসি নিউজ আয়োজিত এই বিতর্কে তারা মুখোমুখি হন। এতে প্রথম থেকেই অর্থনীতি নিয়ে তীব্র আলোচনা শুরু হয়।
মঞ্চে ওঠার পর কমলা হ্যারিস ট্রাম্পের দিকে এগিয়ে গিয়ে করমর্দন করেন। এরপর তিনি তার বক্তব্যের মাধ্যমে বিতর্কের সূচনা করেন। কমলা সরাসরি ট্রাম্পের অর্থনৈতিক নীতির সমালোচনা করে বলেন, ট্রাম্প তার ক্ষমতার সময়কালে মার্কিন কর্মসংস্থানের অবস্থা ভয়াবহ করে তুলেছিলেন। তার প্রশাসন বেকারত্বের হারকে মহামন্দার পর সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় নিয়ে গিয়েছিল।
কমলা আরও বলেন, ১৬ জন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ট্রাম্পের অর্থনৈতিক নীতির বিপক্ষে কথা বলেছেন এবং তাদের মতে, এই নীতিগুলো বাস্তবায়িত হলে আগামী বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেবে। তিনি অভিযোগ করেন, ট্রাম্পের কাছে মার্কিনিদের জন্য কোনো পরিকল্পনা নেই এবং তার লক্ষ্য মূলত নিজেকে রক্ষা করা, দেশের মানুষের সেবা করা নয়।
কমলা হ্যারিসের বক্তব্য আরও জোরালো হয় যখন তিনি ট্রাম্পের করপোরেট করছাড়ের প্রসঙ্গ তোলেন। তিনি দাবি করেন, ট্রাম্প আবারও বিলিয়নিয়ার ও কর্পোরেশনগুলোর জন্য কর কমানোর পরিকল্পনা করছেন, যা সাধারণ জনগণের জন্য ক্ষতিকর হবে।
ট্রাম্প পাল্টা আক্রমণে বলেন, তার প্রশাসন চীনের ওপর শুল্ক আরোপ করে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার আদায় করেছিল, যা এখনো যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে প্রবাহিত হচ্ছে। তার মতে, এই ধরনের শুল্ক নীতি দেশকে আর্থিকভাবে সমৃদ্ধ করেছে এবং বিশ্ববাজারে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানকে শক্তিশালী করেছে।
এই বিতর্কটি শুধু এবিসি নিউজ নয়, বিবিসি, সিএনএন, চ্যানেল ফোরসহ একাধিক আন্তর্জাতিক সম্প্রচারমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়। নির্বাচনের আগে এই বিতর্ককে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে, কারণ এটি দুই প্রার্থীর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দিচ্ছে।
আগামী ৫ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে এই বিতর্ক দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে, যেখানে দুই প্রার্থীর মধ্যে অর্থনীতি, করনীতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে সরাসরি মতবিরোধ প্রকাশ পেয়েছে। সূত্র : বিবিসি
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল