ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল চত্বরে জঙ্গি হামলা হলে কী করে তা প্রতিহত করা হবে তারই যৌথ মহড়া হলো আজ বৃহস্পতিবার সকালে। এদিন মহড়ায় অংশগ্রহণ করে সেনাবাহিনী, এনএসজি ও সিআইএসএফ'র সেনারা। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল চত্বরে জঙ্গিরা কাউকে অপহরণ করলে কী করে তাকে মুক্ত করা হবে সেই মহড়া দিয়ে দেখায় ইন্ডিয়ান সেনারা।
সফলভাবে এই মহড়া শেষ করার পর দেশটির নৌবাহিনীর চিফ স্টাফ অফিসার ক্যাপ্টেন প্রদীপ অগ্নিহোত্রী বলেন, একাধিক বাহিনীর মধ্যে বোঝাপড়া ও যোগাযোগ কতটা সাবলীল তা বোঝার জন্য আজকের মহড়ার আয়োজন করা হয়েছিল। মহড়া সফল হয়েছে। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, এনএসজি ও সিআইএসএফ একসঙ্গে অপারেশন চালিয়ে জঙ্গিদের নিরস্ত করতে পেরেছে।
২৬/১১ মুম্বাই হামলার ঘটনাটি আজও ভারতের ইতিহাসে একটি গভীর দাগ রেখে গেছে। ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর জঙ্গিরা মুম্বইয়ের তাজ হোটেল, অপেরা হাউস এবং ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ সহ বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালিয়েছিল। তিন দিন ধরে চলে এই হামলার মধ্যে ৩০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিলেন এবং অনেককে অপহৃত করা হয়েছিল। তবে ভারতীয় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, এনএসজি এবং অন্যান্য বাহিনীর সাহসী অভিযান শেষে অপহৃতদের উদ্ধার করা হয় এবং হামলাকারীদের অধিকাংশকে হত্যা করা হয়।
এই ঘটনাটি ভারতীয় সেনাবাহিনী ও পুলিশের জন্য একটি বড় শিক্ষা ছিল। তাই প্রতিবছর ২৬/১১’র দিনটি স্মরণ করার জন্য এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের হামলার মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য বিশেষ মহড়ার আয়োজন করা হয়। চলতি বছর কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল ছিল সেই মহড়ার কেন্দ্রবিন্দু। এই মহড়ায় অংশ নেন সেনাবাহিনীর বিশেষ বাহিনী, পুলিশ এবং অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থার সদস্যরা।
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের সামনে যে মহড়াটি অনুষ্ঠিত হয় তাতে একটি মডেল সিচুয়েশন তৈরি করা হয় যেখানে একটি ভিআইপি (বিশেষ ব্যক্তিত্ব) অপহৃত হয়ে জঙ্গিদের হাতে চলে যায় এবং সেনাবাহিনী তাদের উদ্ধার করতে অভিযান চালায়। এই মহড়াটি বাস্তবসম্মত ছিল, যেখানে সেনারা ভয়ংকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় তাদের দক্ষতা ও সাহস প্রদর্শন করে। এটি একধরনের ‘সোলো মিশন’ ছিল যেখানে সেনারা হ্যান্ডস-অন মেথডে শত্রু মোকাবিলা ও অপহৃতদের উদ্ধার করার জন্য তাদের প্রশিক্ষণ ব্যবহার করেছে।
মহড়ার অংশ হিসেবে ভিক্টোরিয়ার ভিতরে একাধিক ভিআইপি আটকে পড়ে ছিলেন এবং তাদেরকে উদ্ধার করতে সেনারা তৎপরভাবে গুলি চালাচ্ছিল। বাহিরে, সেনারা বন্দুক উঁচিয়ে লক্ষ্য করে রেখেছিল এবং যে কোনো মুহূর্তে গুলি চালানোর প্রস্তুতিতে ছিল। এই ধরনের মহড়া সেনাবাহিনীর দক্ষতা এবং প্রস্তুতির মূল্যায়ন করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি বাহিনীর সদস্যদের মানসিক এবং শারীরিকভাবে চ্যালেঞ্জ করে এবং তাদের সেরা কার্যক্ষমতা প্রদর্শনের সুযোগ দেয়।
সূত্র- ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ