ডিসেম্বরে রাশিয়ায় সামরিক ব্যবহারের জন্য ১৪ লাখ ডলার মূল্যের বিস্ফোরক যৌগ পাঠিয়েছিল ভারত। রাশিয়ার ইউক্রেন যুদ্ধ প্রচেষ্টাকে সমর্থনকারী যেকোনও সংস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের মার্কিন হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও ভারত এই বিস্ফোরক পাঠিয়েছিল।
বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এক বিশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
এইচএমএক্স বা অক্টোজেন নামে পরিচিত এই যৌগটি গ্রহণকারী রাশিয়ান কোম্পানিগুলোর মধ্যে একটি হল বিস্ফোরক প্রস্তুতকারক প্রমিসিনটেজ। এই প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর সম্পর্ক রয়েছে বলে ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থা এসবিইউ-এর একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
ওই কর্মকর্তা জানান, ইউক্রেন এপ্রিল মাসে প্রমিসিনটেজ-এর মালিকানাধীন একটি কারখানার বিরুদ্ধে ড্রোন আক্রমণ শুরু করে। পেন্টাগনের প্রতিরক্ষা প্রযুক্তিগত তথ্য কেন্দ্র এবং সম্পর্কিত প্রতিরক্ষা গবেষণা কর্মসূচি অনুসারে, ক্ষেপণাস্ত্র ও টর্পেডো ওয়ারহেড, রকেট মোটর, বিস্ফোরক প্রজেক্টাইল এবং উন্নত সামরিক ব্যবস্থার জন্য প্লাস্টিক-বন্ডেড বিস্ফোরক তৈরিতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় এইচএমএক্স।
মার্কিন সরকার এইচএমএক্স- কে ‘রাশিয়ার যুদ্ধ প্রচেষ্টার জন্য গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে এবং মস্কোর কাছে এই পদার্থ বিক্রির সুবিধা প্রদানের বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সতর্ক করেছে।
চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলায় সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলছে ভারত। তবে মস্কোর সাথে তার দীর্ঘস্থায়ী সামরিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক ত্যাগ করেনি নয়াদিল্লি। পশ্চিমা দেশগুলো নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে মস্কোর যুদ্ধ অর্থনীতিকে পঙ্গু করার চেষ্টা করলেও রাশিয়ার সাথে ভারতের বাণিজ্য- বিশেষ করে রাশিয়ান তেল ক্রয় শক্তিশালী রয়ে গেছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “ভারত পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধের আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা বিবেচনা করে এবং তার শক্তিশালী আইনি ও নিয়ন্ত্রক কাঠামোর ভিত্তিতে দ্বৈত-ব্যবহারের পণ্য রফতানি করে আসছে, যার মধ্যে এই ধরনের রফতানির প্রাসঙ্গিক মানদণ্ডের একটি সামগ্রিক মূল্যায়ন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।”
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতার রয়টার্সের চিহ্নিত নির্দিষ্ট চালান সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করেনি। তবে পররাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে, তারা বারবার ভারতকে জানিয়েছে যে, সামরিক-সম্পর্কিত ব্যবসা করা কোম্পানিগুলো নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকিতে রয়েছে।
একজন মুখপাত্র বলেছেন, “ভারত একটি কৌশলগত অংশীদার যার সাথে আমরা পূর্ণ এবং খোলামেলা আলোচনা করি, যার মধ্যে রাশিয়ার সাথে ভারতের সম্পর্কও রয়েছে। আমরা ভারতসহ আমাদের সব অংশীদারদের বারবার স্পষ্ট করে দিয়েছি যে, রাশিয়ার সামরিক শিল্প ঘাঁটির সাথে ব্যবসা করা যেকোনও বিদেশি কোম্পানি বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকিতে রয়েছে।” সূত্র: রয়টার্স
বিডি প্রতিদিন/একেএ