ইরানের সংসদের স্পিকার মোহাম্মদ বাকের গালিবাফ ইরানের বিপ্লবী গার্ডের সদস্যদের উদ্দেশে বলেছেন, আপনারা যেখানে চেয়েছেন, সেখানেই আঘাত করেছেন। ইসরায়েলের যে অঞ্চলের আকাশ ও ভূমি তাদের জন্য অনিরাপদ করে তুলেলেন।
গালিবাফ আরও বলেন, গাজার ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে আমাদের ক্ষেপণাস্ত্রের আলো দেখেছে ফিলিস্তিনের শিশু-কিশোররা। তারা আনন্দে হাস্যরস করেছে। এইভাবেই আপনারা নিপীড়িতদের পক্ষে লড়েছেন।
তিনি ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র বাহিনীকে ইরানি পৌরাণিক নায়ক আরাশ তীরন্দাজের সঙ্গে তুলনা করে বলেন, আজকের এই ইতিহাসের সন্ধিক্ষণে আমাদের আইআরজিসি বাহিনীর আরাশরা, বিশ্বাস ও জীবনের ধনুকে দীর্ঘপাল্লার তীর রেখে দখলদার অঞ্চলের দিকে তা ছুড়ে মেরেছে, যা শুধু শত্রুর ঘুম কেড়ে নেয়নি, বরং গোটা ইসলামি উম্মাহকে গর্বিত করেছে।
তিনি বলেন, এই যুদ্ধে আমরা দেখেছি কীভাবে তোমরা ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণস্থলের পাশে দাঁড়িয়ে জাতিকে রক্ষা করেছো। আমাদের যোদ্ধারা প্রাণ উৎসর্গ করে শত্রুর এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের ক্ষমতাকে অর্থহীন করে দিয়েছে। তারা ছিলো শত্রুর দুর্দশার কারণ।
গালিবাফ বলেন, ইসলামি প্রজাতন্ত্রের স্থায়িত্ব ও ক্ষমতার আসল উৎস হলো জনগণের উপস্থিতি। জনগণের হৃদয়ই আমাদের শক্তির উৎস। এই যুদ্ধে আমরা দেখেছি আল্লাহ কীভাবে সেই হৃদয়গুলোকে রূপান্তরিত করেছেন। আমরা কিছু নেতাকে হারিয়েছি ঠিকই, কিন্তু এই জাতি আমাদের গর্বিত করেছে।
তিনি আরও বলেন, আমেরিকা, ইংল্যান্ড ও ইসরায়েল একটি শক্তিশালী ইরানকে দেখে ক্ষুব্ধ। তারা রাগান্বিত, কারণ ইসলামি প্রজাতন্ত্র গড়ে উঠেছে এই জাতির হৃদয় ও চেতনার মধ্য থেকে।
গত ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের উপর একটি অঘোষিত আক্রমণ শুরু করে। ইরানের পরমাণু, সামরিক ও আবাসিক এলাকাগুলোতে চালানো এই হামলায় প্রায় এক হাজার শহীদ হন, যাদের মধ্যে ছিলেন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা, পারমাণবিক বিজ্ঞানী ও বেসামরিক নাগরিকরা।
এই হামলার প্রতিশোধে আইআরজিসি অ্যারোস্পেস ফোর্স ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ থ্রি’-এর অংশ হিসেবে ২২ দফা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় দখলদার অঞ্চলের বিভিন্ন শহরে, যা ইসরায়েলি বাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে।
শেষ পর্যন্ত, ২৪ জুন উভয় পক্ষের সম্মতিতে একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয় এবং সংঘর্ষ বন্ধ হয়।
সূত্র: প্রেস টিভি
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল