থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে চলমান সীমান্ত সংঘর্ষ ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। অন্তত ১৬ জন নিহত ও লক্ষাধিক মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়ার পর থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এই সংঘাত যুদ্ধের দিকে এগোচ্ছে।
বিবাদের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে বহু পুরনো সীমান্ত সংক্রান্ত বিরোধ, যা ফরাসি ঔপনিবেশিক আমলের পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি করে আসছে। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া এই সামরিক সংঘর্ষ শুক্রবারেও অব্যাহত আছে। যা দুই দেশের মধ্যে দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ লড়াই হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
থাইল্যান্ডের উবন রাতচাথানি ও সুরিন প্রদেশে আর্টিলারি ও রকেট হামলায় আহত হয়েছে বহু মানুষ এবং বাস্তুচ্যুত হয়েছে ১ লক্ষেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। অপরদিকে, কম্বোডিয়ার ওদ্দার মিনচেই প্রদেশে ১৫শ’ টিরও বেশি পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। কম্বোডিয়ার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সেখানে কমপক্ষে একজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মহল থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। আসিয়ানের চেয়ারম্যান মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম উভয় দেশের নেতাদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি জানান, উভয় পক্ষই শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ বিবেচনা করতে প্রস্তুত।
তবে আনোয়ারের আশাবাদের মধ্যেও বৃহস্পতিবার রাতভর সংঘর্ষ অব্যাহত ছিল। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ফ্রান্সও শান্তিপূর্ণ সমাধানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ শুক্রবার জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছে এই সংকট নিয়ে। এরইমধ্যে, কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত জাতিসংঘের কাছে থাইল্যান্ডের আগ্রাসন বন্ধে হস্তক্ষেপের আবেদন জানিয়েছেন।
উভয় দেশই একে অপরের দিকে অভিযোগ তুলছে। থাইল্যান্ড বলছে, কম্বোডিয়ার ড্রোন নজরদারি থেকেই উত্তেজনা শুরু, আর কম্বোডিয়া বলছে, থাই সেনারা এক প্রাচীন মন্দির এলাকায় চুক্তি ভঙ্গ করে ঢুকে পড়েছিল।
সূত্র: বিবিসি
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল