বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিক দূষণ রোধে একটি বাধ্যতামূলক চুক্তি করার লক্ষ্যে ১০ দিনের আলোচনা শুরু হয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বরে দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে আয়োজিত আলোচনায় কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারার পর চলতি বছর সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) আবারও এই আলোচনা শুরু হলো।
তিন বছর ধরে আলোচনার পর ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর বিরোধিতার কারণে কোনো ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। বুসানে আলোচনা ব্যর্থ হলেও দেশগুলো গোপনে আলোচনা চালিয়ে গেছে ও এখন জাতিসংঘের এই নতুন উদ্যোগে আলোচনায় বসেছে। জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচির (ইউএনইপি) নির্বাহী পরিচালক ইঙ্গার অ্যান্ডারসেন বলেন, বুসানের পর থেকে ব্যাপক কূটনৈতিক তৎপরতা চালানো হয়েছে, যা আলোচনায় গতি এনেছে। তিনি আরও বলেন, চুক্তি সহজ হবে না, সরল পথে হবে না। তবে চুক্তির সুযোগ আছে, অবশ্যই আছে।
প্লাস্টিক দূষণ এখন এতটাই ব্যাপক যে, এর ক্ষুদ্র কণা বা মাইক্রোপ্লাস্টিক বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বত থেকে গভীরতম সাগরের তলদেশ পর্যন্ত, এমনকি মানবদেহের প্রায় প্রতিটি অংশে পাওয়া গেছে। ২০২২ সালে দেশগুলো এই সংকট সমাধানের জন্য একটি বাধ্যতামূলক আন্তর্জাতিক চুক্তিতে পৌঁছানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, কিন্তু বুসানে তা ব্যর্থ হয়। কিছু দেশ প্লাস্টিক উৎপাদন সীমা ও ক্ষতিকর রাসায়নিক নিষিদ্ধ করার মতো উচ্চাভিলাষী চুক্তির পক্ষে ছিল। অন্যদিকে, বেশিরভাগ তেল উৎপাদনকারী দেশ এই উৎপাদন সীমা মানতে রাজি ছিল না ও শুধু বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দিতে চেয়েছিল।
আলোচনায় সভাপতিত্ব করছেন ইকুয়েডরের কূটনীতিক লুইস ভায়াস ভালদিভিয়েসো। তিনি বলেছেন, এখন একটি কার্যকর, ন্যায্য ও উচ্চাভিলাষী চুক্তি হাতের নাগালে রয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের পথ ও অবস্থান ভিন্ন হতে পারে। তবে আমাদের গন্তব্য একটাই... একটি প্লাস্টিক দূষণমুক্ত বিশ্ব। জেনেভার এই আলোচনায় ৬০০টির বেশি বেসরকারি সংগঠন অংশ নিচ্ছে। ভালদিভিয়েসো বলেন, বুসান থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার এনজিও ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের চুক্তির জটিল বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ