গত জুন মাসে আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় ২৬০ জন নিহত হন। সেই দুর্ঘটনার শিকার চার যাত্রীর পরিবার এবার যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং এবং যন্ত্রাংশ সরবরাহকারী হানিওয়েল-এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।
তাদের অভিযোগ, ত্রুটিপূর্ণ জ্বালানি সুইচের কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে এবং কোম্পানি দুটি ঝুঁকির বিষয়ে অবগত থাকা সত্ত্বেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
বিবিসির হাতে আসা মামলার নথিতে দেখা গেছে, এই মামলায় প্রতিষ্ঠান দুটির বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ আনা হয়েছে। নিহতদের পরিবারের দাবি, উড়োজাহাজের নকশায় ত্রুটি ছিল, যার কারণে ভুলবশত জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, উড্ডয়নের পরপরই উড়োজাহাজের ইঞ্জিনে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এতে বিমানের থ্রাস্ট বা ধাক্কা কমে যায়। এই মামলার মূল ফোকাসও তাই ফুয়েল সুইচ-এর ওপর।
মামলায় বলা হয়েছে, এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট ১৭১-এর ফুয়েল সুইচটি 'রান' থেকে 'কাট-অফ' অবস্থানে চলে গিয়েছিল, যা দুর্ঘটনার কারণ। নিহতদের পরিবারের অভিযোগ, এই নকশার ত্রুটি সম্পর্কে বোয়িং এবং হানিওয়েল অবগত ছিল।
তারা আরও উল্লেখ করেছে, ২০১৮ সালে ইউএস ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন একটি পরামর্শ বার্তা জারি করেছিল। যেখানে বিমান সংস্থাগুলোকে ফুয়েল সুইচের লকিং মেকানিজম পরীক্ষা করতে বলা হয়। যাতে ভুল করে এটি বন্ধ না হয়ে যায়। কিন্তু এটি বাধ্যতামূলক করা হয়নি। সাধারণ পরামর্শ ছিলো।
মামলার বাদীপক্ষ বলছে, বোয়িং এবং হানিওয়েল এই দুর্ঘটনার ঝুঁকি সম্পর্কে জেনেও নিষ্ক্রিয় ছিল। তারা বিমান সংস্থাগুলোকে ত্রুটিপূর্ণ সুইচ পরীক্ষা বা মেরামতের জন্য সতর্ক করেনি, এমনকি প্রতিস্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশও সরবরাহ করেনি।
বিবিসির পক্ষ থেকে বোয়িং এবং হানিওয়েলের সাথে যোগাযোগ করা হলে বোয়িং এই মামলা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে তারা ভারতের এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরোর প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনের দিকে ইঙ্গিত করেছে। অন্যদিকে, ইউএস ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এর আগে বোয়িং বিমানের ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচগুলো নিরাপদ বলে জানিয়েছিল।
সূত্র: বিবিসি
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল