প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা। শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে পানি জমে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে সাতজনের প্রাণহানি ঘটেছে। বেশিরভাগ মৃত্যুই বিদ্যুৎস্পৃষ্টজনিত। শহরের নিম্নাঞ্চলগুলো তলিয়ে গেছে। বাড়িঘর ও সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কলকাতা বিমানবন্দরের শতাধিক ফ্লাইট বাতিল ও বিলম্বিত হয়েছে।
২৪ ঘণ্টার ভারী বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে শহরের বিভিন্ন অঞ্চল। বেনিয়াপুকুর, কালিকাপুর, নেতাজি নগর, গড়িয়াহাট, ইকবালপুর, বেহালা এবং হরিদেবপুর। শহরের বিভিন্ন অংশে ঘটেছে মর্মান্তিক ঘটনা। মৃতদের মধ্যে তিনজন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন বলে জানা গেছে।
বৃষ্টির কারণে কলকাতা বিমানবন্দরে বিমান চলাচলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১০০টিরও বেশি ফ্লাইট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৬২টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। ৪২টি ফ্লাইট দেরিতে চলেছে। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে পানি জমার কারণে যাত্রীদের বিমানবন্দরে পৌঁছাতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। এয়ার ইন্ডিয়া এবং ইন্ডিগো তাদের যাত্রীদের জন্য বিশেষ সতর্কতা জারি করে জানিয়েছে, তারা যেন বিমানবন্দরে যাওয়ার আগে ফ্লাইটের সময়সীমা যাচাই করে নেন এবং হাতে অতিরিক্ত সময় নিয়ে রওনা হন।
জলমগ্নতার কারণে শহরের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। ট্র্যাফিক জ্যামের পাশাপাশি ব্যাহত হয়েছে মেট্রো এবং শহরতলি রেল পরিষেবাও। বহু নিচু এলাকার বাড়িতে পানি ঢুকে পড়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শহরের অনেক স্কুল ছুটি ঘোষণা করেছে। কলকাতা পৌরসংস্থার তথ্য অনুযায়ী, গড়িয়া কামদাহারি এলাকায় সর্বোচ্চ ৩৩২ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়াও যোধপুর পার্কে ২৮৫ মিমি এবং কালীঘাটে ২৮০ মিমি বৃষ্টি হয়েছে।
কলকাতা ও তার আশেপাশের পরিস্থিতি এখন প্রশাসনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, তিনি জীবনে এমন পানি জমতে দেখেননি। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, বৃষ্টি না হলে মঙ্গলবার রাতের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। পাশাপাশি, বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা কলকাতা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কর্পোরেশন জলমগ্ন রাস্তায় বিদ্যুতের খুঁটি ও তার থেকে দূরে থাকার জন্য সাধারণ মানুষকে সতর্ক করেছে।
সূত্র: এনডিটিভি
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল