বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের সময় হাঁটু গেড়ে বসায় অন্তত ২০ জন এজেন্টকে বরখাস্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, ২০২০ সালে ওয়াশিংটন ডিসিতে ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনের সময় বিক্ষোভকারীদের সামনে হাঁটু গেড়ে বসেছিলেন ওই এজেন্টরা। দীর্ঘ বিতর্কের পর তাঁদের চাকরিচ্যুত করা হলো।
সিবিএস নিউজ ও অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস জানায়, সম্প্রতি এফবিআই মহাপরিচালক কাশ প্যাটেল সংস্থাটিকে পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে এজেন্টদের চাকরিচ্যুত করেছেন। এদের মধ্যে অনেকে এর আগে পদাবনতি বা প্রশাসনিক ছুটিতে ছিলেন। বরখাস্তের নোটিশে তাঁদের কর্মকাণ্ডকে ‘বিচক্ষণতার অভাব’ বলে উল্লেখ করা হয়।
২০২০ সালের মে মাসে কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিক জর্জ ফ্লয়েড হত্যার পর যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে আন্দোলন। সে সময় রাজধানীতে দায়িত্বরত কয়েকজন এজেন্ট বিক্ষোভকারীদের সামনে হাঁটু গেড়ে বসেন। অনেকের মতে এটি পরিস্থিতি শান্ত করার কৌশল হলেও সংস্থার ভেতরে-বাইরে এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২৫ মে যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপোলিস শহরে নকল নোট ব্যবহারের অভিযোগে আটক হন জর্জ ফ্লয়েড। গ্রেপ্তারের সময় শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক শভিন প্রায় সাড়ে ৯ মিনিট তাঁর গলায় হাঁটু গেড়ে বসে থাকেন। শ্বাস নিতে না পারার কথা বারবার বললেও তাতে কর্ণপাত করা হয়নি। হাসপাতালে নেওয়ার পর ফ্লয়েডকে মৃত ঘোষণা করা হয়। এ ঘটনাই বিশ্বজুড়ে ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনকে নতুন করে জোরালো করে তোলে।
এফবিআই এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন এ সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়ে কংগ্রেসের কাছে তদন্ত দাবি করেছে। সংগঠনটির বিবৃতিতে বলা হয়, নেতৃত্বের দায়িত্ব হলো আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা, সেটি বারবার ভঙ্গ করা নয়। অভিজ্ঞ এজেন্টদের এভাবে সরিয়ে দেওয়া সংস্থার ভেতরে আস্থার সংকট তৈরি করছে।
এফবিআই মুখপাত্র এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে কাশ প্যাটেলের নেতৃত্বে এফবিআই পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তাকেও সরানো হয়েছে। গত মাসে বরখাস্ত হন অন্তত পাঁচজন এজেন্ট ও কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন স্টিভ জেনসেন ও ব্রায়ান ড্রিসকল। জেনসেন ২০২১ সালের ক্যাপিটল হিলে হামলার তদন্তে ভূমিকা রেখেছিলেন, আর ব্রায়ান ড্রিসকল ট্রাম্প প্রশাসনের শুরুতে ভারপ্রাপ্ত এফবিআই পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
বরখাস্ত হওয়া কয়েকজন এজেন্ট ইতিমধ্যেই মামলা করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এবং ট্রাম্প প্রশাসনবিরোধী তদন্তে জড়িতদের সরাতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে কাশ প্যাটেল এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “যারা বরখাস্ত হয়েছেন তারা সংস্থার মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হতে পারেননি।”
সোর্সঃ সিএনএন
বিডি প্রতিদিন/আশিক