গাজা উপত্যকায় নিজ বাড়ির ধ্বংসস্তূপে ফিরে কিছুটা হলেও স্বস্তি খুঁজে পেয়েছিলেন শোরবাসি নামের পরিবারটি। শনিবার দুপুরে তারা নিজেদের মধ্যে কথা বলছিলেন। হঠাৎ একটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনে বাড়ির বাইরে আসেন। দেখেন, মাটিতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে তাদের পরিবারের ছয় বছর বয়সী যমজ শিশু ইয়াহিয়া ও নাবিলা।
স্থানীয়রা জানান, শিশুরা খেলার সময় একটি গোলাকার বস্তু খুঁজে পায়। সেটি দেখতে খেলনার মতোই ছিল। স্পর্শ করতেই তা বিস্ফোরিত হয়। প্রকৃতপক্ষে সেটা ছিল বোমা। আহত শিশু দুজন বেঁচে ফেরার মতো অবস্থায় আছেন। তবে তাদের আর আগের মতো সুস্থ জীবনে ফেরা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
প্রকৃতপক্ষে, গাজায় যুদ্ধবিরতি চললেও ঝুঁকি পিছু ছাড়ছে না। অক্টোবরের ১০ তারিখে শুরু হওয়া অস্ত্রবিরতির পর থেকে লাখ লাখ ফিলিস্তিনি ধ্বংসস্তূপে ফিরে যাচ্ছেন। খুঁজছেন নিজেদের ভেঙে যাওয়া ঘরবাড়ির অবশিষ্টাংশ। হারানো জিনিসপত্র কিংবা এখনও উদ্ধার না হওয়া মরদেহগুলো।
তবে সেখানে এখনো মুখোমুখি হতে হচ্ছে অবিস্ফোরিত বোমা ও যুদ্ধাস্ত্রের অবশিষ্টাংশের। যা শিশু ও বেসামরিক মানুষের জীবনে নতুন হুমকি হয়ে উঠছে। যেগুলো বাসিন্দাদের অজান্তে বিস্ফোরণে হতাহতের সংখ্যা বাড়িয়ে তুলছে।
জাতিসংঘের মাইন অ্যাকশন সার্ভিস ইউএনএমএএস-এর প্রধান লুক ইরভিং জানিয়েছেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ছেড়ে যাওয়া এলাকাগুলোতে 'অবিশ্বাস্যরকম বেশি বিস্ফোরক ঝুঁকি রয়েছে'।
ইউএনএএমএএস জানিয়েছে, গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত অবিস্ফোরিত বোমার আঘাতে কমপক্ষে ৫২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ২৬৭ জন। নিহতের সংখ্যা আরও বেশি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
গত সপ্তাহে জাতিসংঘের এক ব্রিফিংয়ে ইরভিং বলেন, বর্তমান যুদ্ধবিরতি চলাকালীন ৫৬০টি অবিস্ফোরিত মারণাস্ত্র পাওয়া গেছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও অনেক থাকার শঙ্কা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, গাজাজুড়ে প্রায় ৬ কোটি টন ধ্বংসাবশেষ পড়ে আছে।
জানা গেছে, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে গাজায় বিস্ফোরিত না হওয়া গোলা ও যুদ্ধাস্ত্র সংগ্রহ এবং নিষ্ক্রিয়করণে অংশ নিতে আরও বিশেষজ্ঞ দল যোগ দেবেন।
সূত্র: এপি
বিডিপ্রতিদিন/এমই