প্রাথমিকে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগসহ তিন দফা দাবি জানিয়েছে জাতীয় মূল্যবোধ সংরক্ষণ পরিষদ। গতকাল রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে সংগঠনটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত জাতীয় সেমিনারে এসব দাবি জানানো হয়। সেমিনারে একমঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব, শিক্ষাবিদ, গবেষকসহ আরও অনেকে।
তিন দফা দাবিতে বলা হয়, দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগ্য ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে শিক্ষানীতি সংস্কারের রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এবং রাষ্ট্রের অন্যান্য সব প্রতিষ্ঠানে সব ধরনের ধর্মীয় মূল্যবোধ পরিপন্থি সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, বাংলাদেশ ৯২ শতাংশ মুসলমানের দেশ। সুতরাং তাদের অধিকার বাস্তবায়ন করা সাংবিধানিক অধিকার। আমাদের সুযোগ হলে ধর্মীয় শিক্ষকের পদ সৃষ্টি করে তা বাস্তবায়ন করব ইনশা আল্লাহ। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা হলো একটা সমাজ, রাষ্ট্র ও মানবসভ্যতার ফাউন্ডেশন। ধর্মীয় শিক্ষা হলো সে ফাউন্ডেশনের মূল শক্তি। একটা জাতি ধ্বংস করার অধিকার ড. ইউনূস আপনার নেই। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির, সৈয়দ মো. রেজাউল করীম পীর চরমোনাই বলেন, দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের প্রজ্ঞাপন এখনই দিতে হবে। অন্যথায় আমরা সব দল মিলে সম্মিলিত কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব। এ ইস্যু আমাদের প্রজন্মের অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িত, তাই আমরা যতটুকু কঠোর হওয়া দরকার, ততটুকুই হব।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ২৪-পরবর্তী বাংলাদেশে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের জন্য আমাদের সভা-সমাবেশ করতে হবে তা আমাদের প্রত্যাশা ছিল না। বিনয়ী ভাষায় বলছি, অবিলম্বে গানের শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করুন। এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা ১৬ বছরের ইসলামি শিক্ষা ও আলেমদেরকে যেভাবে উন মানুষ করে রেখেছে, ২৪-পরবর্তী বাংলাদেশে তা হবে এটা খুবই দুঃখজনক। যে শিক্ষা কালচারকে ধারণ করে না তা একটা জাতির শিক্ষাব্যবস্থা হতে পারে না।
খেলাফত মজলিস বাংলাদেশের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেন, এই দেশের ৫ শতাংশ মানুষের মধ্যেও গান চর্চার সংস্কৃতি নেই। আর এদেশের ৯২ শতাংশ মানুষ ইসলাম চর্চা করে। এই বৃহৎ জনগোষ্ঠীর মতামতকে উপেক্ষা করে যারা গানের শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাদের কাণ্ডজ্ঞান নেই। অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত বাতিল করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মুফতি রেজাউল করিম আবরার। প্রবন্ধ পাঠ করেন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সাবেক সচিব ও শিক্ষা অধিকার সংসদের উপদেষ্টা ড. খ. ম. কবিরুল ইসলাম।