খেলল বসুন্ধরা কিংস, জিতল আল সিব। এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে এভাবেই মিশন শুরু করল বাংলাদেশের ক্লাবটি। দুর্ভাগ্য তাদের ভালো খেলেও ৩-২ গোলে হেরে মাঠ ছাড়তে হয়। শুরুতেই গোলের সুযোগ পেয়েছিল কিংস। ডরিয়লটনের ব্যর্থতায় বল জালে জড়ায়নি। ৭ মিনিটে বরং নাসেরের গোলে এগিয়ে যায় আল সিব। রাফায়ালের গোলে প্রথমার্ধে সমতায় ফিরেছিল কিংস। দ্বিতীয়ার্ধে রাকিবের গোলে ২-১ গোলে এগিয়ে যায়। ম্যাচ ছিল তপুদেরই নিয়ন্ত্রণে। ৬১ মিনিটে রক্ষণভাগের ভুলে জাহেরের গোলে আল সিব সমতায় ফিরে। ৭৭ মিনিটে আল আজিজের গোলে ওমানের ক্লাবটি ৩-২ গোলে এগিয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে তারা।
পেশাদার ফুটবলে অভিষেকের পর একের পর এক শিরোপা জিতে ইতিহাস গড়েছে কর্পোরেট এ ক্লাবটি। এএফসি ক্লাব ফুটবলেও বাংলাদেশের ক্লাব হিসেবে অনন্য এক রেকর্ড গড়ল বসুন্ধরা গ্রুপের বসুন্ধরা কিংস। এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে গতকাল তারা উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ওমান আল সিব ক্লাবের বিপক্ষে। কুয়েতের জাবের আল মোবারক আল সাবাহ স্টেডিয়ামে এ ম্যাচ দিয়ে টানা ছয়বার এএফসি কাপে খেলার রেকর্ড করল কিংস। ঢাকা আবাহনী, ঢাকা মোহামেডান, মুক্তিযোদ্ধা, ব্রাদার্স ইউনিয়ন, শেখ জামাল ধানমন্ডি ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র এশিয়ান ক্লাব ফুটবল, এএফসি কাপ চ্যালেঞ্জ লিগ খেললেও টানা ছয়বার খেলার রেকর্ড কারোর নেই। বাংলাদেশের ক্লাব হিসেবে এ কৃতিত্ব শুধু বসুন্ধরা কিংসেরই।
এবারে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছে কিংস। প্রিলিমিনারি রাউন্ডে হেরে যাওয়ায় ঢাকা আবাহনী আর এগোতে পারেনি। দেশের ফুটবলপ্রেমীদের নজর তাই কুয়েতের দিকে। বাকি দুই ম্যাচেও থাকবে। মধ্যপ্রাচ্যে ফুটবল বা ক্রিকেটে বাংলাদেশের ম্যাচ হলে গ্যালারিতে প্রচুর বাংলাদেশির দেখা মেলে। এর কারণ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় প্রচুর বাংলাদেশি অবস্থান করেন চাকরির কারণে। কুয়েতও এর বাইরে নয়। ওমানের আল সিবের তুলনায় গতকাল কিংসের সমর্থক সংখ্যা ছিল অনেক বেশি। অনেকের হাতে কিংসের পতাকা ও লাল জার্সি পরে মাঠে এসেছিলেন । জাতীয় দলের অধিকাংশ তারকা ফুটবলার কিংসে খেলায় মধ্যপ্রাচ্যে এ আসরের গুরুত্ব অনেক বেড়েছে।
ম্যাচের ফল কী হয় এ নিয়ে বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের মাঝে অপেক্ষার শেষ ছিল না। বাংলাদেশের কোনো টিভিতে চ্যালেঞ্জ লিগের ম্যাচ সম্প্রচার হচ্ছে না। তাই টেনশনটা ছিল বেশি। পত্রিকা অফিসে ফোন করে ফল কী হয়েছে তা অনেকে জানতে চেয়েছেন। এক সময়ে আবাহনী-মোহামেডানের ম্যাচ ঘিরে আগ্রহ থাকলেও কয়েক বছর ধরে কিংসের যে কোনো ম্যাচেই উন্মাদনা থাকে অন্যরকম। মধ্যপ্রাচ্যের ক্লাব আল কারামাহকে হারিয়ে বাংলাদেশের একমাত্র ক্লাব হিসেবে চ্যালেঞ্জ লিগে জায়গা করে নিয়েছে কিংস। তাই বাড়তি উত্তেজনা থাকা স্বাভাবিক। গতকাল মাঠে নামার আগে এএফসি কাপে ভারতের বিখ্যাত ক্লাব মোহনবাগান, গোকুলাম, ওড়িশাসহ সাত জয়ের রেকর্ড ছিল।
গতকাল আসি আসি করেও অষ্টম জয় এলো না। ঘরোয়া আসরে সফল হলেও এফসি কাপে যেন হতাশা পিছু নিয়েছে বসুন্ধরা কিংসের। তিনবার তীরে এসে তরী ডোবায় চূড়ান্ত পর্বে খেলা সম্ভব হয়নি। গতকাল পিছিয়ে থেকে ২-১ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর মনে হচ্ছিল চ্যালেঞ্জ লিগে গ্রুপ ম্যাচে শুরুটা হবে জয়ে। তাও হলো না। প্রাধান্য বিস্তার করেও রক্ষণভাগের ব্যর্থতায় জেতা ম্যাচে হারতে হলো। একে ট্র্যাজেডি ছাড়া আর কী বলা যায়। দেখা যাক বাকি দুই ম্যাচে কী করে। ২৮ অক্টোবর লেবাননের আল আনসার ও ৩১ অক্টোবর কুয়েত এসসির বিপক্ষে খেলবে কিংস।