দেশের মানুষের মাথাপিছু আয়ের তুলনায় ঢাকা জেলার মানুষের মাথাপিছু আয় প্রায় দ্বিগুণ বলে তথ্য দিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। ব্যবসায়ী এ সংগঠনটি বলেছে, ঢাকা জেলার মানুষের মাথাপিছু আয় ৫ হাজার ১৬৩ মার্কিন ডলার প্রায়।
গতকাল রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ইকোনমিক পজিশন ইনডেক্স (ইপিআই) বিষয়ক এক আলোচনা অনুষ্ঠানে এমন তথ্য জানানো হয়েছে। দেশের অভ্যন্তরীণ আয়ের পাশাপাশি প্রবাসী আয়সহ যত আয় হয়, তা একটি দেশের মোট জাতীয় আয়। সেই জাতীয় আয়কে মোট জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করে মাথাপিছু আয় বের করা হয।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)-এর হিসাবে, গত অর্থবছর (২০২৪-২৫) শেষে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ছিল ২ হাজার ৮২০ মার্কিন ডলার। ঢাকার মানুষের মাথাপিছু আয় সারা দেশের তুলনায় দ্বিগুণ হওয়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীদের এই সংগঠনটির ভাষ্য, দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বড় একটি অংশ সম্পন্ন হয় ঢাকা জেলায়। দেশের মোট কর্মসংস্থানের ৪০ শতাংশ আসে এই জেলা থেকে।
ঢাকা চেম্বার জানায়, বিবিএস-এর ২০১১ সালে করা জেলাভিত্তিক জিডিপির তথ্যকে ভিত্তি ধরে এ জেলার বিনিয়োগ, ভোগ, ব্যয়, আমদানি, রপ্তানি, আয়তন ও জনসংখ্যা বৃদ্ধি প্রভৃতি বিষয়কে বিবেচনায় নিয়ে ঢাকা জেলার মাথাপিছু আয়ের এ হিসাব অনুমান করা হয়েছে। তবে ঢাকার এ মাথাপিছু আয় নিয়ে অনুষ্ঠানে কেউ কেউ প্রশ্ন তোলেন।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা চেম্বারের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব এ কে এম আসাদুজ্জামান পাটোয়ারী। তিনি জানান, ঢাকাকে বিবেচনা করা হয় আর্থিক খাতের অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সাড়ে ৭০০-এর বেশি কোম্পানির প্রধান কার্যালয় ঢাকা জেলায় অবস্থিত। তিনি আরও বলেন, ঢাকা খুবই শিল্পঘন জেলা। দেশের মোট পণ্য রপ্তানির ৪০ শতাংশের বেশি হয় এ জেলা থেকে। সব মিলিয়ে মোট দেশজ আয়ে (জিডিপি) এককভাবে ৪৬ শতাংশ অবদান রাখছে ঢাকা জেলা। ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, স্থানীয় বিভিন্ন সূচকে দেখা যায়, দেশের অর্থনীতি ভালো করছে। কিন্তু বৈশ্বিক সূচকের কিংবা অন্য দেশের সঙ্গে তুলনা করলে দেখতে পাই, আমরা বিভিন্ন সূচকে সবচেয়ে নিচের দিকে থাকি। তাই এসব সূচকের তথ্যে আত্মতুষ্টির কারণ নেই; বরং এসব সূচককে বৈশ্বিক মানের সঙ্গে তুলনা করে প্রকাশ করলে সেটি বেশি কার্যকর হবে। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি খাতের প্রতিনিধি অংশ নেন।