এশিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠার মিশনে আরও এক সাফল্য যুক্ত করলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড, ট্রাম্প। তাঁর উপস্থিতিতে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া স্বাক্ষর করেছে বর্ধিত শান্তি চুক্তি। কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী অনুতিন, চার্নভিরাকুল ও হুন, মানেত চুক্তিতে সই করেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, “Delivering Peace” লেখা ব্যানারের সামনে সই হওয়া এই চুক্তিটি তিন মাস আগে সম্পন্ন হওয়া যুদ্ধবিরতির ওপর ভিত্তি করে তৈরি।
কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন, মানেত বলেন, “এই চুক্তি পূর্ণভাবে বাস্তবায়িত হলে এটি স্থায়ী শান্তির ভিত্তি গড়বে এবং দুই দেশের সম্পর্ক মেরামতের পথ খুলে দেবে। সীমান্তের নিরীহ মানুষ বছরের পর বছর সংঘাতে ভুগছে, এখন সময় এসেছে শান্তি ফেরানোর।”
গত জুলাইয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সরাসরি ফোনে দুই দেশের নেতাদের যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান এবং সতর্ক করেন, সংঘাত চললে যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য আলোচনায় বিরতি দেবে। তিনি বলেন, “আমরা উভয় দেশের সঙ্গেই বাণিজ্য ও সহযোগিতা চালিয়ে যাব, যতক্ষণ তারা শান্তিতে থাকে।”
দীর্ঘদিন ধরে সীমান্তে রকেট ও ভারী গোলা বিনিময়ের অভিযোগে উত্তপ্ত ছিল দুই দেশ। এ সংঘাতে অন্তত ৪৮ জন নিহত ও প্রায় তিন লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে — যা সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ।
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী অনুতিন জানান, সীমান্ত এলাকা থেকে দুই দেশই ভারী অস্ত্র সরিয়ে নেবে এবং আটক ১৮ কম্বোডিয়ান সেনাকে মুক্তি দেওয়া হবে। তিনি বলেন, “এটি সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রথম পদক্ষেপ।”
ট্রাম্পকে মালয়েশিয়ায় স্বাগত জানান দেশটির প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার, ইব্রাহিম। কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ঐতিহ্যবাহী নৃত্যশিল্পীরা তাঁকে স্বাগত জানায়। লালগালিচায় তাঁদের সঙ্গে নেচে এক হাতে যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা, অন্য হাতে মালয়েশিয়ার পতাকা তুলে ধরেন ট্রাম্প।
এদিকে কুয়ালালামপুরে আসিয়ান সম্মেলনের ফাঁকে যুক্তরাষ্ট্র–চীন বাণিজ্য প্রতিনিধিদের মধ্যে সমান্তরাল বৈঠক হয়। মার্কিন বাণিজ্য আলোচক জেমিসন, গ্রিয়ার জানান, “আলোচনায় শুল্কবিরতি ও ‘রেয়ার আর্থ’ খনিজ নিয়েও কথা হয়েছে, ফলপ্রসূ বৈঠক হয়েছে এটি।”
বৈঠকে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্র খুব শিগগিরই থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ খনিজসম্পদ নিয়ে চুক্তি করবে। পাশাপাশি কম্বোডিয়ার সঙ্গেও বড় পরিসরের বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তুতি চলছে।
রোববার ট্রাম্পের ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ, ইনাসিও, লুলা, দ্য, সিলভার সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে। লুলা আশা করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ শতাংশ বাণিজ্য শুল্ক কমানো হবে। তবে কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক, কার্নির সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠক বাতিল হয়েছে। বরং ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, কানাডার পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।
সূত্র: রয়টার্স
বিডি প্রতিদিন/আশিক