যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এশিয়া সফরের প্রথম দিনে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে পৌঁছে স্থানীয় নৃত্যে অংশ নেন। ভিডিওটি ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়েছে।
২৩ ঘণ্টার দীর্ঘ ফ্লাইট শেষে রবিবার সকালে স্থানীয় সময় এয়ার ফোর্স ওয়ান থেকে নামার পরই ৭৯ বছর বয়সী ট্রাম্পকে স্বাগত জানানো হয় একদল স্থানীয় শিল্পীর ঐতিহ্যবাহী নাচের মাধ্যমে।
রঙিন পোশাকে সজ্জিত সেই শিল্পীরা মালয়েশিয়ার প্রধান জাতিগোষ্ঠীগুলোর প্রতিনিধিত্ব করেন—বর্নিওর আদিবাসী, মালয়, চীনা ও ভারতীয়।
ট্রাম্পও উৎসবের আবহে নাচে যোগ দেন, কোমর দোলান, মুষ্টি তুলে ছন্দে ছন্দে নাচেন। পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম, যিনি নিজেও তাল মিলিয়ে মাথা দোলান।
এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান শক্ত করা ও বিভিন্ন বাণিজ্য চুক্তি নবায়নের লক্ষ্যে ট্রাম্প এই পাঁচ দিনের সফরে রয়েছেন। টোকিওতে নবনির্বাচিত জাপানি প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি যাবেন দক্ষিণ কোরিয়ায়, যেখানে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা। পরিকল্পনায় আছে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গেও সম্ভাব্য সাক্ষাৎ, যা শেষ মুহূর্তে যুক্ত হতে পারে।
ট্রাম্পের বিমানকে মালয়েশিয়ার আকাশে দুইটি এফ–১৮ যুদ্ধবিমান এসকর্ট করে—যা সাধারণত মধ্যপ্রাচ্যের সফরে রাষ্ট্রীয় অতিথিদের দেওয়া হয়।
ওয়াশিংটন ছাড়ার পর থেকেই ট্রাম্পের সূচি ছিল ব্যস্ত। আটলান্টিক পাড়ি দেওয়ার সময় বিমানে সাংবাদিকদের সঙ্গে ১৪ মিনিটের এক সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
পরে জার্মানিতে জ্বালানি নেওয়ার পর কাতারে যাত্রাবিরতি করেন। সেখানেই এয়ার ফোর্স ওয়ানের ভেতরে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আব্দুর রহমান আল থানির সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই সময় বিমানের স্ক্রিনে ইউএফসি খেলার সরাসরি সম্প্রচার চলছিল।
এই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য ছিল ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য শান্তি পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা—যার অংশ হিসেবে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির পর গাজায় আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের প্রস্তুতি চলছে।
ট্রাম্প বলেন, “আপনারা মধ্যপ্রাচ্যে প্রকৃত শান্তি দেখতে যাচ্ছেন। গত ৩ হাজার বছরে এমন কিছু হয়নি।”
তিনি আরও জানান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, জর্ডান ও মিসরসহ বেশ কয়েকটি দেশ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে যুক্ত হচ্ছে।
এ মাসে নোবেল শান্তি পুরস্কার না পেলেও বৈশ্বিক সংঘাত নিরসন এই সফরে ট্রাম্পের প্রধান এজেন্ডা হিসেবে রয়ে গেছে।
মালয়েশিয়ায় সফরের প্রধান আয়োজন হলো কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের মধ্যে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান। গত জুলাইয়ে সীমান্তযুদ্ধে কমপক্ষে ৬৬ জন নিহতের পর ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছায়—যার প্রেক্ষিতে এই চুক্তি স্বাক্ষর হতে যাচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/আশিক