ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ নিয়ে অব্যাহত উত্তেজনার মধ্যে  ইউরোপ ও এশিয়ায় পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার এবং হুমকি-ধমকি বন্ধ করতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং। শুক্রবার বেইজিংয়ে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজের সঙ্গে বৈঠকের পর চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং এ আহ্বান জানান।  তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যৌথভাবে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের বা হুমকির বিরোধিতা, ইউরেশিয়ায় পারমাণবিক সংকট রোধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার এবং পারমাণবিক যুদ্ধ করা উচিত নয় বলে অবস্থান নেওয়া উচিত। চীনের প্রেসিডেন্টের এ বিবৃতিতে পারমাণবিক হুমকির জন্য নির্দিষ্ট করে কোনো দেশের নাম উল্লেখ করা হয়নি। তবে কয়েক সপ্তাহে পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে বিশ্ব নেতাদের বাগাড়ম্বর ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার গত আট মাসের যুদ্ধ পরমাণু সংঘাতে রূপ নিতে পারে বলেও আশঙ্কা তীব্র হয়েছে। শুক্রবার বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-৭ সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে রাসায়নিক, জীবাণু বা পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করলে মস্কোকে ‘গুরুতর পরিণতির’ মুখোমুখি হতে হবে। কৌশগলগত পারমাণবিক বি-৬১ পারমাণবিক বোমা ফেলার আদলে অক্টোবরে ইউরোপে পারমাণবিক মহড়া শুরু করেছে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো। আলজাজিরা

 পশ্চিমা জোটের এ মহড়া প্রায় রাশিয়ার সামরিক মহড়ার মতো একই ধাঁচে চালানো হয়েছে। উভয় পক্ষই এ মহড়া নিয়মিত বলে অভিহিত করেছে।  ইউক্রেনীয় সৈন্যরা যুদ্ধক্ষেত্রে ‘ডার্টি বোমা’ বিস্ফোরণের পরিকল্পনা করছে বলে গত মাসে রাশিয়া অভিযোগ করে। ডার্টি বোমা মূলত এক ধরনের প্রচলিত বিস্ফোরক যন্ত্র; যা তেজস্ক্রিয় পদার্থে পূর্ণ থাকে। চলতি সপ্তাহে জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থা বলেছে, রাশিয়ার অভিযোগের পর কিয়েভের অনুরোধে ইউক্রেনে পরিদর্শন করা তিনটি স্থানে ‘অঘোষিত পারমাণবিক কর্মকান্ডের’ কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্প্রতি হুঁশিয়ার করে বলেছেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন যদি ইউক্রেনে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করেন, তাহলে বিশ্ব মানবসভ্যতা-বিধ্বংসী পারমাণবিক যুদ্ধের ঝুঁকির (আরমাগেডনের) মুখোমুখি হতে পারে। সেপ্টেম্বরে পুতিন বলেছিলেন, ইউক্রেনের কাছ থেকে নেওয়া অঞ্চলসহ রাশিয়ার কোনো ভূখন্ড যদি ন্যাটো বাহিনীর হুমকির মুখে পড়ে, তাহলে তিনি পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ঝুঁকি নাকচ করে দিতে পারেন না। সেই সময় তিনি ন্যাটোর সদস্য দেশগুলোর বিরুদ্ধে ‘পারমাণবিক ব্ল্যাকমেল’ এবং রাশিয়াকে ‘ধ্বংস’ করার পরিকল্পনার অভিযোগ করেন। তবে পরবর্তীতে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি বাতিল করে দিয়ে মস্কোর কর্মকর্তারা জানান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটোর সঙ্গে কোনো সংঘর্ষের পরিকল্পনা নেই রাশিয়ার। গত সপ্তাহে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, ইউক্রেন যুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারে মস্কোর কোনো ইচ্ছা নেই। তিনি বলেন, ‘আমরা এর কোনো প্রয়োজনও দেখছি না। এ অস্ত্র ব্যবহারের রাজনৈতিক অথবা সামরিক কোনো মানে নেই।