শনিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
১ কোটি মানুষ বিদ্যুৎহীন ইউক্রেনে

আসছে শীত নিয়ে আতঙ্কে জেলেনস্কি

তাপমাত্রা এখন শূন্য ডিগ্রিরও নিচে

ইউক্রেনজুড়ে শীত আসছে। মানে হাড়কাঁপানো তুষারের স্তর। কিন্তু ইউক্রেনীয়দের জন্য এবারের শীত চরম দুর্ভোগ নিয়ে আসবে। তারই ইঙ্গিত দিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি অভিযোগ করে বলেছেন, রাশিয়ার নতুন করে মিসাইল হামলার কারণে ১ কোটির বেশি ইউক্রেনীয় বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে এক ভাষণে জেলেনস্কি আরও বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি’। বৃহস্পতিবার রাশিয়া নতুন করে দফায় দফায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় বলে অভিযোগ ইউক্রেনের। বিদ্যুৎ অবকাঠামো, বেসামরিক ভবনসহ গুরুত্বপূর্ণ সব স্থাপনায় এসব হামলা চালানো হয় বলে দাবি কিয়েভ-সংশ্লিষ্টদের।

ভিডিওবার্তায় তিনি বলেন, ইউক্রেনে এখন তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রিরও নিচে নেমে গেছে। এমন সময়ে এই মিসাইল হামলা ইউক্রেনীয়দের জীবনকে ভয়াবহ করে তুলেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ১৭ অক্টোবরের মিসাইল হামলার পর ইউক্রেনের পক্ষে আর বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা সম্ভব হবে না। সিএনএন জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার প্রতিদিনের ভিডিওবার্তায় জেলেনস্কি দেশের বিদ্যুৎ পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেন। তিনি জানান, ভিন্নিতসিয়া, ওডেসা, সুমি এবং কিয়েভে সব থেকে খারাপ অবস্থা। পরিস্থিতি যতখানি সম্ভব স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে কর্মীরা। তবে দেশজুড়ে বিদ্যুৎ সংকট চলছে। যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ অবকাঠামো ঠিক আছে সেখানেও দিনের বেশির ভাগ সময় বিদ্যুৎ থাকছে না। উল্লেখ্য, রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র হামলা এই সপ্তাহে ইউক্রেনজুড়ে শহরগুলোতে গুরুতর অবকাঠামোতে আঘাত করেছে, কারণ রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনের অনেক অংশে বৃহস্পতিবার মৌসুমের প্রথম তুষারপাত দেখা গেছে।

কিয়েভের বিদ্যুৎ সরবরাহকারী কোম্পানি ইয়াসনো জানিয়েছে, শহরটিতে সারা দিনই লোডশেডিং চলেছে। স্বাভাবিক অবস্থায় যে পরিমাণ বিদ্যুৎ সরবরাহ দরকার পড়ে এখন তার অর্ধেকও আসছে না। আরও বড় ক্ষতি এড়াতে ইঞ্জিনিয়াররা সিস্টেমটিকে স্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন। জেলেনস্কি বলেন, দনিপ্রোপেত্রোভস্কে এক হামলায় কয়েক ডজন মানুষ আহত হয়েছেন। জাপোরিঝঝিয়ায় বুধবার রাতে একটি আবাসিক ভবনের ধ্বংসাবশেষ থেকে সাতটি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে পরে সেখানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯ হয়েছে বলে জানিয়েছে সিএনএন।

ইউক্রেনের বৃহত্তম শহরগুলোর মধ্যে একটি যেটি জাপোরিঝঝিয়ার ঠিক উত্তরে, দিনিপ্রো সেখানে ব্যাপক হামলা হয়েছে। সেখানকার একটি কারখানাও ধ্বংস করা হয়েছে। ইউক্রেনের আরেক কর্মকর্তা বলেন, শহরে গোলাবর্ষণের কারণে এক কিশোরসহ ২৩ জন আহত হয়েছেন। তবে প্রকৃতপক্ষে কতজন হতাহত হয়েছে তা নিশ্চিত করতে পারেনি বিবিসি। এসব হামলার কারণে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি অভিযোগ করে বলেছেন, রাশিয়া শান্তি চায় না।

ইউক্রেন আগ্রাসন শুরুর পর যে অঞ্চলটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিল দেশটি সেই খেরসন আবার তাদের দখলে গেছে সম্প্রতি। তবে এখনো কিছু অঞ্চল রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে। যদিও যুদ্ধে জয়ী হতে মরিয়া ইউক্রেনের জেলেনস্কির সরকার। ফলে দেশ দুটির মধ্যে লড়াই আরও তীব্র হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর