সোমবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

যুদ্ধ ইস্যুতে ভেস্তে গেল জি২০ সম্মেলন

যুদ্ধ অভাবনীয় দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং অর্থনীতিতে সংকট আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে

ভারতের বেঙ্গালুরুতে শনিবার গ্রুপ অব টোয়েন্টি (জি২০) জোটভুক্ত দেশগুলোর অর্থমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠকের সভাপতি হিসেবে ভারত আলোচনার টেবিলে যুদ্ধের প্রসঙ্গ উত্থাপনে অনাগ্রহী ছিল। তবে পশ্চিমা দেশগুলো এ বিষয়ে জোর দিয়ে জানায়, নিন্দা প্রস্তাব যুক্ত না থাকলে তারা কোনো প্রস্তাবে সমর্থন দেবেন না। তবে এ কারণে অর্থাৎ ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে মতানৈক্যের কারণে তাদের বৈঠক কার্যত ভেস্তে যায়। জি২০ সভাপতি দেশ ভারত পরে একটি বিবৃতি জারি করে। সেখানে বলা হয়, অধিকাংশ দেশই ইউক্রেনে রুশ হামলার তীব্র নিন্দা করেছে। তবে রাশিয়ার ওপরে যেসব আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে সে প্রসঙ্গে নানা মতামত উঠে এসেছে। তবে গত জি২০ সম্মেলনে যুদ্ধ সংক্রান্ত যা প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল, রাশিয়া ও চীন বাদে সব দেশই তার সঙ্গে সহমত হয়েছে।

এ জন্য পরে বিশেষ বিবৃতি জারি করে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেখানে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জি৭-এর সদস্য দেশগুলো একজোট হয়ে কিছু সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। তারপর বাকি দেশগুলোকে সে সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য করা হচ্ছে। কার্যত একাধিপত্য চালাচ্ছে এ দেশগুলো। কিন্তু এটি পরিষ্কার ব্ল্যাকমেলের পর্যায়ে পৌঁছেছে।’ জি২০ জোটের সদস্যদের মধ্যে ঐকমত্য না হওয়ায় সভাপতির দায়িত্বে থাকা ভারত দুই দিনের বৈঠকে আলোচিত বিষয়গুলোর পাশাপাশি যেসব বিষয়ে মতৈক্য হয়নি সেগুলো উল্লেখ করে কেবল একটি বিবৃতি দিয়ে দায় সেরেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বেশির ভাগ দেশ ইউক্রেনে যুদ্ধের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং এই যুদ্ধ মানুষের অভাবনীয় দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বিদ্যমান সংকটকে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।’ এ কারণে বিশ্বের সরবরাহ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হচ্ছে, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় ঝুঁকি এবং জ্বালানি ও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়েছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। এক বছর আগে ইউক্রেনে আগ্রাসনর পর সম্প্রতি নড়েচড়ে বসেছে চীন। তারা সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোকে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করেছে। এ সপ্তাহে ইউরোপকে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করেছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। তার পরিকল্পনাকে উষ্ণ স্বাগত জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন।

এ সপ্তাহে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ১২ দফা পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে চীন। এর মধ্যে আছে শান্তি আলোচনার আহ্বান এবং জাতীয় সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধার কথা। তবে এ ১২ দফার মধ্যে সুনির্দিষ্ট করে বলা হয়নি, ইউক্রেন থেকে রাশিয়াকে অবশ্যই সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। একই সঙ্গে রাশিয়ার আগ্রাসনের নিন্দা জানানো হয়নি। রাশিয়া একে স্বাগত জানালেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, পুতিন এতে আহ্লাদিত। তাহলে কীভাবে এটা ভালো কিছু হলো?

সর্বশেষ খবর