চলতি মাসের মাঝামাঝি কানাডার আলবার্টায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি৭ শীর্ষ সম্মেলনের ৫১তম আসর। জোটের বাইরে থাকা বিশ্বের অনেক গুরুত্বপূর্ণ দেশও এতে অংশ নিয়ে থাকে। এদের একটি হিসেবে ভারতের প্রধানমন্ত্রীও জি৭ সম্মেলনে অংশ নিয়ে থাকেন। তবে এবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দাওয়াত পাঠায়নি আয়োজক কানাডা। সেই সঙ্গে নয়াদিল্লিও এবার অটোয়ার সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের জেরে শীর্ষ সম্মেলনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে গতকাল এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এনডিটিভি। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবারের জি৭ সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন না। এর ফলে ২০১৮ সালের পর এই প্রথম তিনি এ ধরনের আয়োজনে যোগ দেওয়া থেকে বিরত থাকছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো। জি৭-এর বর্তমান সভাপতি কানাডা। জোটভুক্ত দেশগুলো হলো যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, কানাডা ও জাপান।
উল্লেখ্য, ১৫-১৭ জুন জি৭ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সেখানে বৈশ্বিক গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ইস্যু যেমন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং পশ্চিম এশিয়ার উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। সূত্রগুলো জানিয়েছে, এখনো পর্যন্ত কানাডা সরকার প্রধানমন্ত্রী মোদিকে কোনো আমন্ত্রণ পাঠায়নি। তবে আমন্ত্রণ এলেও মোদি এ সফরে যেতেন না, কারণ ভারত-কানাডা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বর্তমানে এতটাই খারাপ অবস্থায় রয়েছে যে, এমন সফরের আগে ব্যাপক প্রস্তুতি ও পদক্ষেপের প্রয়োজন হতো।
মূলত ভারত ও কানাডার সম্পর্ক চূড়ান্ত অবনতির দিকে মোড় নেয় ২০২৩ সালে। সে সময় কানাডার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো অভিযোগ করেন, খালিস্তানপন্থি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যাকাণ্ডে ভারতের জড়িত থাকার প্রমাণ রয়েছে। কিন্তু নয়াদিল্লি বলছে, কানাডার নতুন সরকার এখনো ভারতের মূল চিন্তার বিষয় বিশেষ করে কানাডার মাটিতে খালিস্তানপন্থিদের কার্যক্রম নিয়ে স্পষ্ট কোনো অবস্থান নেয়নি। ভারতের একজন কর্মকর্তার ভাষ্য, ‘(কানাডায়) প্রধানমন্ত্রী মোদির সফরের জন্য অনেক পরিশ্রম ও প্রস্তুতির দরকার হতো, যা এখনকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অবস্থার আলোকে সম্ভব নয়।’
ভারতের আরও একজন কর্মকর্তা জানান, ‘নিরাপত্তা বিষয়টিও’ বড় চিন্তার বিষয়। তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দুই দেশের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের মধ্যে কিছু যোগাযোগ হয়েছে এবং উভয়পক্ষ নতুন হাইকমিশনার নিয়োগের বিষয়েও ভাবছে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে নরেন্দ্র মোদি হিরোশিমায় অনুষ্ঠিত জি-৭ সম্মেলনে গিয়েছিলেন। এর আগেও তিনি ইতালি, জার্মানি ও অন্যান্য সম্মেলনেও উপস্থিত ছিলেন। গত বছর ইতালির সভায় তিনি আউটরিচ সেশনে অংশ নেন।