যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, গাজায় পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে তা নির্ধারণের দায়িত্ব ইসরায়েলের। এর অর্থ হলো, যুদ্ধবিধ্বস্ত এ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে সামরিক অভিযান বিস্তারের ইসরায়েলি পরিকল্পনায় ওয়াশিংটনের নীরব সমর্থন রয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
শুক্রবার ইউরোপ ও আরব বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে গাজা সিটি দখলের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানানো হয়। তবে ট্রাম্প এ মন্তব্যের মধ্য দিয়ে কার্যত তাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক মহলে এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে। দুই বছরের বিধ্বংসী সংঘাতের পর ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা নেতানিয়াহুর ‘হামাসকে পরাজিত করার’ পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরায়েল আক্রমণের পরই যুদ্ধ শুরু হয়। ঘোষণার আগে মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি বর্তমানে গাজায় ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের জন্য মানবিক ত্রাণ সরবরাহ বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিচ্ছেন। অন্য বিষয়গুলো মূলত ইসরায়েলের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে। বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ক্যাথলিক টিভি নেটওয়ার্ক ইডব্লিউটিএন-কে বলেছেন, ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য যা প্রয়োজন, তা ইসরায়েলই ঠিক করবে।
ট্রাম্প ও রুবিওর বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, গাজায় যুদ্ধবিরতি আলোচনার ভেস্তে যাওয়ার পর ওয়াশিংটন ইসরায়েলের অবস্থানকে কার্যত গ্রহণ করেছে। গত সপ্তাহে মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেও আলোচনার বিস্তারিত প্রকাশ পায়নি। মানবিক সহায়তা বাড়ানোর জন্য চাপ বাড়ালেও যুক্তরাষ্ট্র দাবি করছে, হামাসের হাতে থাকা সব ইসরায়েলি জীবিত ও মৃত জিম্মিদের মুক্ত করতে হবে এবং সংগঠনটিকে পুরোপুরি ধ্বংস করতে হবে। শুক্রবার ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামির সঙ্গে আলোচনায় মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স বলেছেন, আমাদের লক্ষ্য স্পষ্ট। হামাসের অস্তিত্বই শেষ করে দিতে হবে। যাতে তারা আর কখনো নিরপরাধ ইসরায়েলি নাগরিকদের আক্রমণ করতে না পারে। হোয়াইট হাউসে ফেরার পর থেকে ট্রাম্প ইসরায়েলকে ‘অটল সমর্থন’ দিয়ে যাচ্ছেন। যদিও মানবিক সহায়তার ওপরও জোর দিচ্ছেন। গত মাসে দোহায় জিম্মি মুক্তি চুক্তিতে হামাসের অস্বীকৃতির পর তিনি কার্যত যুদ্ধবিরতি প্রচেষ্টা ছেড়ে দেন। বর্তমানে হামাসের হাতে ৪৯ ইসরায়েলি জিম্মি রয়েছে। এদের মধ্যে ২৭ জনের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে।