ইসলামী সুকুক হলো একটি ইসলামী আর্থিক পদ্ধতি, যেখানে শেয়ার বা বন্ডের পরিবর্তে প্রকৃত সম্পদের অংশীদারির ভিত্তিতে অর্থায়ন করা হয়। ইসলামী সুকুক হলো ওই সব আর্থিক দলিল, যা ইসলামী শরিয়ার নীতি মেনে পরিচালিত হয় এবং সুদমুক্ত ব্যবস্থার ভিত্তিতে আয় প্রদান করে।
সুকুকে বিনিয়োগকারীরা মূলত প্রকল্প বা সম্পদে মালিকানা লাভ করেন এবং সেই প্রকল্প বা সম্পদ থেকে আয় লাভ করেন। এটি সাধারণত বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প যেমন— অবকাঠামো উন্নয়ন, শিল্পপ্রতিষ্ঠান বা আবাসন প্রকল্পে ব্যবহৃত হয়।
সুকুকের বৈশিষ্ট্য হলো এটি সম্পদের প্রকৃত মালিকানা এবং আয় নিশ্চিত করে, যেখানে সুদের কোনো সংশ্লেষ থাকে না।
সুকুকের ধরন বিভিন্ন হতে পারে, যেমন—
১. ইজারা সুকুক : ভাড়া বা লিজের ওপর ভিত্তি করে।
২. মুদারাবা সুকুক : ব্যবস্থাপনার অংশীদারির ওপর ভিত্তি করে।
৩. মুশারাকা সুকুক : যৌথ বিনিয়োগের মাধ্যমে সম্পদ অর্জন ও আয়ের ওপর ভিত্তি করে।
৪. সালাম সুকুক : অগ্রিম বিক্রয়ের চুক্তির ওপর ভিত্তি করে।
এগুলো ইসলামী আর্থিক ব্যবস্থায় বেশ জনপ্রিয় এবং বিভিন্ন দেশ ও প্রতিষ্ঠান দ্বারা ব্যবহৃত হয়, কারণ এটি শরিয়া সম্মত এবং ধর্মীয় সংবেদনশীল গ্রাহকদের জন্য আকর্ষণীয়।
যদিও সুকুক ব্যাখ্যা করার জন্য বন্ডকে তুলনামূলক বিন্দু হিসেবে ব্যবহার করা হয়, তবে এটি বোঝা গুরুত্বপূর্ণ যে উভয়টির মধ্যে কিছু মৌলিক পার্থক্য রয়েছে।
সুকুক ইসলামিক অর্থনীতি ধারণা অনুযায়ী কাজ করে, যেখানে রিবা (অর্থ থেকে অর্থ উপার্জন, যেমন—সুদ বা সুদখোর) নিষিদ্ধ।
অন্যদিকে বন্ড এক ধরনের সিকিউরিটি, যা সুদের ভিত্তিতে কাজ করে, কারণ এতে একটি নির্দিষ্ট সুদহার থাকে, যা রিবার সঙ্গে সম্পর্কিত।
সুকুক ও বন্ডের মধ্যে পার্থক্যগুলো আরো গভীরভাবে বোঝার জন্য নিম্নলিখিত বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো—
১. মালিকানার ধরন
সুকুক : সুকুকের ক্ষেত্রে, বিনিয়োগকারী প্রকৃত সম্পদের আংশিক মালিকানা লাভ করেন। এ ধরনের সম্পদের মালিকানার মধ্যে ভবন, যন্ত্রপাতি, সেবামূলক প্রতিষ্ঠান বা প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। এর ফলে সুকুক একটি প্রকৃত সম্পদের সঙ্গে সম্পর্কিত, যেখানে বিনিয়োগকারী প্রকল্পের আয় ও ক্ষতির অংশীদার হন।
বিডি প্রতিদিন/ইই