মেলা শেষ হয়ে যাওয়ার পরও বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের মেলায় জোর করে আটকে রাখার অভিযোগ উঠল আন্তর্জাতিক ভারত শিল্প বাণিজ্য মেলা কমিটির বিরুদ্ধে। অভিযোগ মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রায় অর্ধশতাধিক বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদেরকে গতকাল সোমবার বিকেল থেকে রাত সাড়ে এগারোটা অবধি আটকে রাখা হয়। এই ঘটনায় তীব্র অসন্তোষ ছড়িয়েছে বাংলাদেশের বণিকমহলে।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি কলকাতার কাছেই বিধাননগরের সেন্ট্রাল পার্ক মেলা প্রাঙ্গণে শুরু হয় ২৮তম ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইন্ডিয়া ট্রেড ফেয়ার (আন্তর্জাতিক ভারত শিল্প বাণিজ্য মেলা)। মেলায় বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতের অন্যান্য রাজ্য এবং বিদেশ থেকেও এই মেলায় অংশ নেয়। বেঙ্গল ন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের উদ্যোগে এই মেলার শেষ দিন ছিল গতকাল ২২ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু সেই মেলাকে অতিরিক্ত দুই দিন অর্থাৎ আগামীকাল বুধবার অবধি চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় মেলা কর্তৃপক্ষ। মেলায় অংশগ্রহণকারী ব্যবসায়ীদের চাপেই মেলা কর্তৃপক্ষ প্রধানত এই সিদ্ধান্ত নেয় বলে খবর।
ব্যবসায়ীদের দাবি ছিল চলতি মেলায় ব্যবসার পরিমাণ খারাপ, তাই মেলার মেয়াদ যেন অতিরিক্ত দুই দিন বাড়ানো হয়। এর পরই মেলার মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় মেলা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু মেলা কর্তৃপক্ষের সেই সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই মেনে নিতে রাজি ছিলেন না মেলায় অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশ থেকে আগত ব্যাবসায়ীরা (বাংলাদেশি প্যাভিলিয়নে স্টল দেওয়া ব্যবসায়ীরা)। সোমবার বিকেলেই তারা মেলা কর্তৃপক্ষকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেয়। তাদের বক্তব্য এভাবে মেলার মেয়াদ বাড়ানো যায় না এবং একপ্রকার দেশে ফিরে যেতেই তারা মনস্থির করে ফেলে। এর পরেই শুরু হয় দুই পক্ষের চাপানউতর। মেলা কর্তৃপক্ষের তরফে বাংলাদেশ ব্যবসায়ীদেরকে নানাভাবে মেলা প্রাঙ্গণ না ছাড়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। এমনকি বিকেল থেকে রাত অবধি মেলায় অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের আটকে রাখা হয় বলেও অভিযোগ। স্বাভাবিক ভাবেই চূড়ান্ত হেনস্থার শিকার হতে হয় তাদের।
যদিও মেলা কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ মানতে রাজি নয়। তাদের পাল্টা অভিযোগ বাংলাদেশ প্যাভেলিয়নে স্টল বাবদ প্রাপ্য টাকা বকেয়া ছিল তাই তাদের সেই টাকা মিটিয়ে চলে যেতে বলা হয়।
প্রত্যুত্তরে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে এদিন হিমাংশু মৈত্র জানান মেলা কমিটির এজেন্ট কবির চৌধুরীকে বাংলাদেশ প্যাভেলিয়ন বাবদ রুপি দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই রুপি মেলা কর্তৃপক্ষের হাতে হস্তান্তর না করায় জটিলতা সৃষ্টি হয়। রাতে কবীর চৌধুরী মেলা কর্তৃপক্ষকে বকেয়া বাবদ রুপি বুঝিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়ার পর সোমবার গভীর রাতে সমস্যার সমাধান হয়। অবশেষে আজ মঙ্গলবার সকালে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের মেলা প্রাঙ্গণ পরিত্যাগ করেন।
বিডি-প্রতিদিন/ ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/ রশিদা