জল্পনার অবসান ঘটিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুর কেন্দ্র থেকেই আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হতে চলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। মমতার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে এই খবর জানা গেছে।
২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে জিতেছিলেন তৃণমূলের বর্তমান সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক, মমতার অত্যন্ত আস্থাভাজন সুব্রত বক্সী। পরে রেলমন্ত্রীর পদে ইস্তফা দিয়ে মমতা বন্দোপাধ্যায় যখন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী হন সেসময় তৃণমূলের এই সুরক্ষিত আসটি সুব্রত বক্সী ছেড়ে দেন দলীয় নেত্রীর জন্য। এরপর ওই বছরের নভেম্বর মাসে ওই কেন্দ্রে উপনির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনে সিপিআইএম প্রার্থীকে অধ্যাপকা নন্দিনী মুখোপাধ্যায়কে ৫৪২১৩ ভোটে হারিয়ে জয়লাভ করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। মমতা যেখানে পেয়েছিলেন ৭৩,৬৩৫ টি ভোট, সেখানে নন্দিনীর প্রাপ্ত ভোট ছিল মাত্র ১৯,৪২২।
বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ই এই ভবানীপুর কেন্দ্রের বিধায়ক। কিন্তু ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বদলে যায় ছবিটা। মোদি হাওয়ায় ভর করে বিধানসভা-ওয়াড়ি ফলাফলে দেখা যায় ভবানীপুরে এগিয়ে বিজেপি। এরপর গত বছরেই কলকাতা পুরসভার নির্বাচনেও এই ভবানীপুর কেন্দ্রে আটটি ওয়ার্ডের মধ্যে দুইটি ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থীদের কাছে পরাজিত হয় তৃণমূল প্রার্থীরা।
এই পরিপ্রেক্ষিতেই কংগ্রেস ও সিপিআইএম মনে করে বিরোধীদের একজোট করতে পারলেই ভবানীপুরে তৃণমূলকে রুখে দেওয়া যেতে পারে। আর এই চিন্তাভাবনা থেকেই ওই ভবানীপুর কেন্দ্রে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার জন্য ভারতের সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়কে আর্জি জানিয়েছিল কংগ্রেস এবং সিপিআইএম-দুই দলই। এব্যাপারে দুই দলের তরফেই সাবেক বিচারপতির সাথে প্রাথমিক কথাবার্তা হয় বলেও খবর।
এরপরই কপালে চিন্তার ভাঁজ পরে তৃণমূল নেতৃত্বের কপালে। মমতার বিরুদ্ধে অশোক গঙ্গোপাধ্যায় দাঁড়ালে লড়াই যে কঠিন হবে সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। দুই প্রার্থীর মধ্যেই জয়ের ব্যবধানও কমে যেতে পারে। এরপরই জল্পনা রটে ভবানীপুরের চেয়ে অপেক্ষাকৃত সুরক্ষিত কোন গ্রাম বাংলার আসন থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে দেখা যেতে পারে মমতাকে। কিন্তু এতে রাজ্যের মানুষের কাছে ভুল বার্তা যেতে পারে মনে করেছেন মমতা। তাই আসন্ন নির্বাচনে ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে লড়াই করতে চান মমতা, তার দৃঢ় বিশ্বাস এই কেন্দ্র থেকেই তিনিই জয়লাভ করবেন। তাছাড়া ভবানীপুরের পাশাপাশি অন্য একটি কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার যে জল্পনা রটেছিল তাও উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। তার মতে এতে একদিকে যেমন নির্বাচনী প্রচারণার খরচ বেড়ে যাবে অন্যদিকে তার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
বিডি-প্রতিদিন/ ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/ রশিদা