বিধানসভা ভোটের অন্তত তিন সপ্তাহ আগেই ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ৩০ হাজার আধা-সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিল নির্বাচন কমিশন। এ রাজ্যের ভোট পরিচালনায় এই সিদ্ধান্ত নজিরবিহীন। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
আধাসেনা পাঠিয়েই এ বার দায়িত্ব শেষ করছে না কমিশন। তাদের কোন জেলার কোথায় মোতায়েন করা হবে, তাও দিল্লির নির্বাচন সদন ঠিক করে দিয়েছে। পাশাপাশি প্রথম দু’দফায় জঙ্গল মহলের ভোটে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার আধাসেনা নামানো হবে বলে প্রাথমিকভাবে হিসাব করেছে নির্বাচন অফিস।
ভোট ঘোষণার আগেই এ মাসের গোড়ায় প্রায় ১০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী (সংখ্যায় ১০ হাজার) রাজ্যে চলে এসেছে। ৭ মার্চ পরের লপ্তে এসেছে আরও ১০ হাজার আধা-সেনা। কমিশন সূত্রের খবর, প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়েছিল, রুট মার্চ করা, আর ভোটারদের আস্থা জোগানোর কাজে ভোটের এক মাস আগে থেকে এই ২০০ কোম্পানি বাহিনীই যথেষ্ট। কিন্তু রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি তাদের হিসেবের চেয়েও খারাপ— বিভিন্ন সূত্রে তেমন চিত্রই কমিশনে পৌঁছেছে। তাই দফায় দফায় বাহিনী বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। ১০ মার্চ এসেছে ২৫ কোম্পানি। আগামী সপ্তাহে আসছে আরও ৯৪ কোম্পানি আধা-সেনা। সব মিলিয়ে সংখ্যাটা ৩১৯ কোম্পানি (৩০ হাজারেরও বেশি)।
নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণার দিন একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন—‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী তো তিন দিনের জন্য। তার পর নিরাপত্তার ব্যবস্থা তো আমাদেরই করতে হবে।’’মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য এবং তা নিয়ে বিরোধীদের লাগাতার নালিশও বাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে কমিশনের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। এরপরই কমিশনের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, ভোটারদের মনোবল বাড়াতে পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। ভোট প্রক্রিয়া শেষ হওয়া পর্যন্ত, প্রয়োজনে তার পরেও কিছু দিন থাকবে তারা।
বিরোধীদের অভিযোগ, মমতার আমলে দুষ্কৃতীদের লাগামছাড়া করে পুলিশকে ঠুঁটো করে রাখা হয়েছে। প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর শুনলে নানাভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে। গত এক বছরে নারী নির্যাতন, খুন, রাহাজানি, সংঘর্ষ বেড়েই চলেছে। লোকসভা থেকে পঞ্চায়েত— সব ভোটেই সন্ত্রাস হয়েছে। সর্বশেষ বিধাননগর পুরভোটে যে ভাবে গায়ের জোরে সাধারণ মানুষের ভোট আটকানো হয়েছে, যে ভাবে সাংবাদিকরাও আক্রান্ত হয়েছেন, তার নজির এ রাজ্যে নেই বলেও বিরোধীরা অভিযোগ করেছেন। বিহারে কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহার করে যে সাফল্য মেলার পরে কমিশন এখানেও সেই পথ নিচ্ছে।
বিডি-প্রতিদিন/ ১২ মার্চ, ২০১৬/ রশিদা