প্রতিবারের মতো এবারও কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার অন্যতম আকর্ষণ পদ্মাপাড়ের বাংলাদেশকে ঘিরে। বইমেলা প্রাঙ্গণের একেবারে মাঝখানেই প্রায় সাড়ে তিন হাজার বর্গফুট জুড়ে এই প্যাভিলিয়নের আকর্ষণের মাত্রা এবার অনেকটাই বেড়েছে।
দিনাজপুরেরর কান্তজিও মন্দিরের আদলেই হয়েছে এবারের বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন। প্রায় সাড়ে তিন হাজার বর্গফুট জায়গাজুড়ে এই প্রাভিলিয়নটি। মোট ৩১ টি প্রকাশনা সংস্থা এবারের বই মেলায় অংশ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠান ৫ টি। এগুলো হল বাংলা একাডেমী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র, নজরুল ইন্সিটিউট এবং বাংলাদেশ শিশু একাডেমী। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে থাকছে মাওলা ব্রাদার্স, অনন্যা প্রকাশনী, নান্দনিক, সময়-এর মতো নামীদামী সব প্রকাশনা সংস্থা।
রানু ভট্টাচার্য নামে এক পাঠক জানান ‘এখানে এসে সুন্দুরবনের ওপর লেখা একটি বই কিনলাম। কারণ এপারের সুন্দরবন সম্পর্কে আমার ধারণা ছিল কিন্তু বাংলাদেশের সুন্দরবন সম্পর্কে আমার কিছু জানা নেই। ওপারে কি কি আছে সেটা এবার জানা যাবে। তাছাড়া এই প্যাভিলিয়নটিতে এত মানুষের ভিড় হবে, সেটা দেখেও খুব ভাল লেগেছে।
মাওলা ব্রাদার্স’এর কর্ণধার কুমার দত্ত জানান, আমাদের এই স্টলে প্রবন্ধ, সিরিয়াস ধর্মী ও রেফারেন্স বই’এর কেনার চাহিদা বেশি। তবে ভারতের কেন্দ্রীয় নোট বাতিলের কোন প্রভাব এবার তাদের স্টলে পড়েনি বলেই জানিয়েছেন কুমার দত্ত। তিনি বলেন কারণ চাহিদার কথা মাথায় রেখে যথেষ্ট পরিমাণে খুচরো রুপির মজুদ রাখা হয়েছে। তাছাড়ার ক্রেতারাও আমাদের সমস্যাটা বুঝতে পারছেন যে বিদেশি প্রকাশনা সংস্থা হওয়ার কারণে আমাদের পক্ষে ক্যাশলেস (পেটিএম, এটিএম) পরিসেবা দেওয়া সম্ভব নয়। সেটা জেনেই তারাও আমাদেরকে খুবই সহায়তা করছেন’।
এদিকে আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি উদযাপিত হবে বাংলাদেশ দিবস। এ উপলক্ষ্যে ওইদিন বিকালে বইমেলার এসবিআই অডিটোরিয়ামে ‘বাংলাদেশের কবিতা’ শির্ষক একটি সেমিনার ও বাংলাদেশের প্রখ্যাত শিল্পীদের পরিবেশনায় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হসিাবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। এছাড়াও থাকবেন পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন মন্ত্রী ব্রাত্য বসু, বাংলাদেশের নারী ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বেগম মেহের আফরোজ চুকমি।
উল্লেখ্য, গত ২৫ জানুয়ারী কলকাতার ইএমবাইপাশের ধারে মিলন মেলা প্রাঙ্গণে ৪১ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার উদ্বোধন করেন কোস্টারিকার বিশিষ্ট লেখক রোক্সানা পিন্তো লোপেজ। পরদিন ২৬ জানুয়ারী বইপ্রেমীদের উদ্যেশ্যে এই মেলা খুলে দেওয়া হয়।