ভারতের উত্তরপ্রদেশ বিধানসভার নির্বাচনে একটিও মুসলিম প্রার্থী না দিয়েও বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছে দেশটির ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে আসন্ন পৌরসভার ভোটে কৌশলগত পরিবর্তন করেছে বিজেপি। এই নির্বাচনে নিজেদের প্রভাব বিস্তারে মুসলিমদের ওপরই ভরসা রাখছে দলটি। আগামী ১৪ মে পশ্চিমবঙ্গের সাতটি পৌরসভায় নির্বাচন হতে চলেছে। এই নির্বাচনে ১৪ শতাংশেরও বেশি মুসলিম প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছে বিজেপি।
সাতটি পৌরসভার মধ্যে চারটি উত্তরবঙ্গের পাহাড়ে অবস্থিত, বাকী তিনটি রয়েছে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায়। পাহাড়ের চারটি পৌরসভাতে বিজেপি একটিও প্রার্থী না দিয়ে সেগুলি তাদের জোট সঙ্গী গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা (জিজেএম)-কে ছেড়ে দিয়েছে। অন্যদিকে উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ, মুর্শিদাবাদ জেলার ডোমকল এবং দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার পুজালি পৌরসভায় নিজেদের প্রার্থী দিয়েছে বিজেপি।
রায়গঞ্জ, ডোমকল ও পুজালি পুরসভা মিলিয়ে মোট ৭০টি আসনের মধ্যে ১০টি আসনে মুসলিম প্রার্থী দিয়েছে বিজেপি। শতাংশের বিচারে যা ১৪ শতাংশের কিছু বেশি। মুসলিম অধ্যুষিত ডোমকল পৌরসভার ২০টি আসনের মধ্যে ৭টি এবং পুজালি পুরসভার ১৬টির মধ্যে ৩টিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে বিজেপির সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রার্থীরা। যদিও রায়গঞ্জে লড়াই করলেও সেখানে মুসলিম প্রার্থী দেয়নি বিজেপি।
২০১৪ সালে লোকসভার নির্বাচন এবং পরে ২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার নির্বাচনেও একাধিক আসনে মুসলিম প্রার্থী দেয় বিজেপি। ২০১৪ সালে বিজেপির মনোনয়ন পেয়েছিল ২ শতাংশ মুসলিম প্রার্থী যেখানে ২০১৬ সালে প্রায় ৫ শতাংশের কাছাকাছি মুসলিম প্রার্থীকে টিকিট দিয়েছিল বিজেপি।
বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ শাখার মাইনরিটি সেলের প্রেসিডেন্ট আলি হোসেন জানান, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তারা আরও বেশি সংখ্যায় মুসলিম প্রার্থী দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। এই সংখ্যাটা রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস ও বামেদের দেওয়া মুসলিম প্রার্থীদের থেকেও বেশি হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানান ‘ডোমকল পৌরসভার ৯০ শতাংশের বেশি ভোটার মুসলিম। পুজালি পৌরসভাতেও মুসলিম ভোটারের সংখ্যা অনেক বেশি...তাই এই পৌরসভাগুলিতে আমরা মুসলিম প্রার্থী দিয়েছি’। তিনি আরও বলেন ‘আগে মুসলিমরা বিজেপিতে যোগদান করেনি, কিন্তু বর্তমানে তারা আমাদের দলে আসছে এবং সেই কারণেই আমরা আরও বেশি সংখ্যায় মুসলিম প্রার্থী দিচ্ছি’।
বিডি-প্রতিদিন/০৮ মে, ২০১৭/মাহবুব