ফুলেশ্বরী মুরারি। সেই ছোট বয়স থেকে প্রাতঃকৃত্য সারতে যেতেন মাঠে। শৌচাগার চোখেও দেখেননি। এখন তার বয়স ৯৫ বছর। আর এই শেষ বয়সে প্রথম গেলেন শৌচাগারে। তাও আবার নিজের শৌচাগারে।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে চলছে নির্মল বাংলা প্রকল্প। অনেকে যেখানে শৌচাগার করেও ব্যবহার করেন না, সেখানে ফুলেশ্বরী দেবী অবশ্যই একটা উদাহরণ। ফুলেশ্বরীর বাড়ি বহরমপুর ব্লকের হাতিনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধাপুর গ্রামে। তিন ছেলের মধ্যে বড় ছেলে মারা গেছেন। ৭৮ বছরের মেজ ছেলে মেঘু মুরারির সঙ্গে থাকেন বৃদ্ধা। বাড়িতে মোট ৬ জন। ফলে বাড়িতে শৌচাগার করার কথা কেউ ভাবতেই পারেননি।
দু’মাস আগে জেলা প্রশাসনের সাহায্যে বাড়িতে শৌচাগার হয়। ইটের গাঁথনি। ছাউনি, পলিথিন দিয়ে তৈরি হয়েছে সেই শৌচাগার। বাড়ির সবাই শৌচাগারে গেলেও বৃদ্ধা ফুলেশ্বরী যেতেন না। তিনি বলতেন, ‘ওখানে কিছু করতে পারব না।’ বাড়ির লোক থেকে পাড়ার লোক সবাই বোঝান তাকে। এলাকার দায়িত্বে থাকা সরকারি কর্মীরাও বোঝান। শেষ পর্যন্ত ফুলেশ্বরী রাজি হন।
এখন তিনি শৌচাগার ব্যবহার করছেন। আর ফোকলা মুখে একগাল হেসে ফুলেশ্বরী দেবী বলছেন, ‘সত্যি বুঝতে পারিনি শৌচাগার ব্যবহার করার ফল। সকলেরই শৌচাগার ব্যবহার করা উচিত।’ জেলাশাসক পি উলগানাথনের কথা, ‘আমরা মানুষকে যে বোঝাতে পেরেছি, এই ঘটনা তারই প্রমাণ।’
বিডি-প্রতিদিন/ আব্দুল্লাহ সিফাত তাফসীর