৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১৬:৩৯

কলকাতার আদালতে তোলা হলো পিকে হালদারসহ ৬ অভিযুক্তকে

পরবর্তী শুনানি আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

কলকাতার আদালতে তোলা হলো পিকে হালদারসহ ৬ অভিযুক্তকে

পিকে হালদার। ফাইল ছবি

বাংলাদেশ থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে পিকে হালদারসহ মোট ছয় অভিযুক্তকে অতিরিক্ত ১২ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতের (জুডিশিয়াল কাস্টডি) নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতার নগর দায়রা আদালত।

২২ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতের মেয়াদ শেষে শনিবার আদালতে অভিযুক্তদের তোলা হলে স্পেশাল সিবিআই কোর্ট-৩ এর বিচারক শুভেন্দু সাহা এই নির্দেশ দেন। সেক্ষেত্রে চলতি মাসের ১৬ ফেব্রুয়ারি ফের অভিযুক্তদের আদালতে তোলা হবে। মামলার শুনানি শুরু হবে স্থানীয় সময় দুপুর একটায়।

শনিবার বেলা ১১টার দিকে অভিযুক্তদের আদালতে আনা হয়। পৌনে ১২টার দিকে তাদের স্পেশাল সিবিআই কোর্ট-৩ এর বিচারক শুভেন্দু সাহার এজলাসে তোলা হয়। উভয়পক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য শুনে বিচারক মামলার পরবর্তী হাজিরার দিন ধার্য করেন।

এদিন মূলত পিকে হালদারের ভাই তথা এই মামলার অন্যতম অভিযুক্ত প্রাণেশ কুমার হালদারের জামিনের আবেদনের শুনানি হয়। তার হয়ে আদালতে জামিনের আবেদন করেন আইনজীবী মিলন মুখার্জি।

শুরুতেই তার দাবি ছিল, প্রাণেশ কুমার হালদার বাংলাদেশের নাগরিক নন। উপরন্তু মামলার প্রধান অভিযুক্ত প্রশান্ত কুমার হালদার এবং তার ভাই পৃথ্বীশ কুমার হালদারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ‘অর্থ পাচার সংক্রান্ত আইন-২০১২’ (পিএমএলএ) অভিযুক্ত হলেও সে দেশে তাদের অন্য ভাই প্রাণেশ অভিযুক্ত নয়। তাকে ভারতের ‘অর্থ পাচার সংক্রান্ত আইন-২০০২’ (পিএমএলএ) মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে।

তবে সেই জামিন আবেদনের বিরোধিতা করে ইডির আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী আদালতকে বলেন, প্রাণেশ প্রত্যক্ষভাবে এই মামলায় জড়িত না থাকলেও, সে জেনেশুনে তার ভাই পিকে হালদারের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে ভারতে তার সম্পত্তি এবং ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছে।

এদিন প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলে ইংরেজি ভাষায় জামিন আবেদনের শুনানি। শুনানি চলাকালীন বিচারকের হাতে বাংলা ভাষায় লেখা বাংলাদেশের অর্থ পাচার সংক্রান্ত আইনের যাবতীয় নথি বিচারপতির হাতে তুলে দেন প্রাণেশের আইনজীবী। এসময় বিচারক শুভেন্দু সাহা বলে উঠেন ‘বাহ! সবই তো দেখছি বাংলা ভাষায়।’ এ সময় ভাষার ভিত্তিতে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে জন্ম নেওয়া বাংলাদেশের প্রসঙ্গটিও উঠে আসে।

আইনজীবী মিলন মুখার্জি জানান, আমরা প্রাণেশের জামিনের জন্য আবেদন করেছি। তার সপক্ষে সমস্ত কাগজপত্র আদালতের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তিনি জামিনের যোগ্য। 

ইডির আইনজীবী জানান, আজ ৬ নম্বর অভিযুক্ত প্রাণেশ কুমার হালদারের জামিনের আবেদনের শুনানি ছিল। দু’পক্ষই তাদের মত করে আদালতে তথ্য দিয়েছে। আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি নতুন করে শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।

তিনি আরও জানান, তদন্ত প্রক্রিয়া এখনো চলছে, সেক্ষেত্রে ইডির তদন্তকারী কর্মকর্তাদের হাতে নতুন তথ্য উঠে আসছে। ফলে আমাদের পক্ষে নতুন করে অতিরিক্ত চার্জশিট দেওয়া হতে পারে।

উল্লেখ্য, অশোকনগরসহ পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু জায়গায় অভিযান চালিয়ে ২০২২ সালের ১৪ মে পিকে হালদারকে গ্রেফতার করে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। এছাড়া গ্রেফতার করা হয় তার ভাই প্রাণেশ হালদার, স্বপন মিস্ত্রি ওরফে স্বপন মৈত্র, উত্তম মিস্ত্রি ওরফে উত্তম মৈত্র, ইমাম হোসেন ওরফে ইমন হালদার ও আমানা সুলতানা ওরফে শর্মী হালদারকে।

গত ১১ জুলাই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কলকাতার আদালতে চার্জশিট জমা দেয় ইডি। অর্থ পাচার সংক্রান্ত আইন-২০০২ এবং দুর্নীতি দমন আইন-১৯৮৮ মামলায় ছয় অভিযুক্তের নামে চার্জ গঠন করা হয়। বর্তমানে অভিযুক্ত পিকে হালদারসহ পাঁচ পুরুষ অভিযুক্ত রয়েছে প্রেসিডেন্সি কারাগারে। অন্যদিকে একমাত্র নারী অভিযুক্ত রয়েছেন আলিপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর