বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

যেখানে আটকে আছে কক্সবাজার বিমানবন্দর

যেখানে আটকে আছে কক্সবাজার বিমানবন্দর

জটিলতায় আটকেই আছে কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্প। প্রস্তাবিত সম্প্রসারণ এলাকার প্রায় ৪০ হাজার বস্তিবাসীকে স্থানান্তর করা যায়নি। আর সে কারণেই দীর্ঘদিনেও কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীতকরণের কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। সংকট কাটেনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপেও। স্থানীয় প্রশাসন অবৈধ দখলে থাকা বস্তিটি উচ্ছেদের ঝুঁকি নিতে পারছে না। ফলে এই এক জায়গায়ই থমকে আছে কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর গড়ার প্রকল্পটির ভবিষ্যৎ। সূত্র জানায়, পর্যটননগরী কক্সবাজারকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে চায় সরকার। এখানে যাতায়াত ব্যবস্থা দেশ ও দেশের বাইরের পর্যটকদের জন্য সহজ করতেই বিমানবন্দরটি আন্তর্জাতিকে রূপ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয় গত মহাজোট সরকারের সময়। কিন্তু প্রায় ৪৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে গ্রহণ করা এ প্রকল্প আজও আলোর মুখ দেখেনি। বিমানবন্দরের উন্নয়ন কাজের জন্য বছর দুই আগে ৬৮২ একর জমি অধিগ্রহণ করে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে বুঝিয়েও দেওয়া হয়। তবে তারপর আর সামনের দিকে এগোয়নি কাজ। সময়ের ব্যবধানে প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৬৩ কোটি টাকায়। কর্মকর্তারা বলছেন, শুধু ওই ৪০ হাজার মানুষকে স্থানান্তর নিয়ে জটিলতার কারণে বিমানবন্দরটির উন্নয়ন কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। তাদের বিমানবন্দরের অদূরে পৌরসভার বাইরে খুরুশকুল এলাকায় ফ্ল্যাট নির্মাণ করে বরাদ্দ দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু বস্তিবাসী এতে রাজি হচ্ছেন না। তাদের ভয়, বস্তি থেকে উচ্ছেদ হলে তাদের আয়ের প্রধান উৎস শুঁটকি ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই কর্মসংস্থান হারানোর আশঙ্কায় বস্তিবাসী পৌরসভার বাইরে যেতে চান না। এক্ষেত্রে স্থানীয় কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা তাদের উসকানিও দিয়েছেন। অভিযোগ আছে, বিএনপি-জামায়াতের অনেক নেতা বস্তিবাসীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তাদের পেছনে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতারও সমর্থন রয়েছে। ফলে প্রশাসন বিভিন্ন সময়ে উদ্যোগ নিলেও বস্তির বাসিন্দাদের সরাতে পারেনি। তাদের বক্তব্য, পৌরসভার বাইরে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করলে তারা দখল ছাড়বেন না। সূত্র জানায়, কক্সবাজারের সাবেক জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে গঠিত ১৮ সদস্যের কমিটি স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের পর্যায়ে নিয়েছিল। কিন্তু বর্তমান জেলা প্রশাসক নিজের মতো করে সমাধানের চেষ্টা করছেন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অবশ্য জানিয়েছেন, বিমানবন্দরের উন্নয়ন কাজ শুরু করতে খুব দ্রুতই ভূমিহীনদের পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া শুরু হবে।

সর্বশেষ খবর