জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রথম দিন কুশলিহার ও অঁচলবাড়িয়া মেলা দিয়ে শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী জামাই মেলা। প্রতি বছরের মতো এবারও জ্যৈষ্ঠ মাসে বগুড়ার কাহালু উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অর্ধশত জামাই মেলা অনুষ্ঠিত হবে। কয়েকশ বছর আগে অসংখ্য সাধু, সন্ন্যাসী, ফকির ও জটাধারী মহিলার আনাগোনা ছিল এই উপজেলায়। প্রবীণদের ধারণামতে তাদের মধ্যে অনেকেই ছিল আধ্যাত্মিক জ্ঞানের অধিকারী। ওই সময় এখানকার মানুষ অসুখ-বিসুখ ও বিপদে-আপদে সাধু, সন্ন্যাসী, ফকির ও জটাধারী মহিলাদের সাহায্য নিয়ে বিপদ মুক্ত হতো। তাদের দেওয়া তেল, পানি পড়া, তাবিজ, গাছ-গাছড়ার ওষুধে রোগমুক্ত হতো। আর আধ্যাত্মিক জ্ঞানের অধিকারীদের ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সবাই সম্মান করত। এলাকা ছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় তাদের অসংখ্য ভক্ত ছিল। বিশেষ করে চুল জটাধারী যে মহিলা ছিল তাদের বলা হতো মাদার। এই মহিলাদের মৃত্যুর পর থেকেই তাদের স্মরণেই সম্ভবত উপজেলার কোনো কোনো এলাকায় মেলার আয়োজন করা হতো। আবার কারও কারও মতে বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে যখন বৃষ্টির পানি হতো না, তখন স্থানীয় লোকজন বৃষ্টির জন্য লাল সালু নিশান নিয়ে নেচে-গেয়ে গ্রামে গ্রামে চাল তুলত। সেই চাল দিয়ে বাঁশের মাথায় লাল সালু নিশান টানিয়ে মেলার আয়োজন করা হতো। আয়োজকরা সেখানে রান্না-বান্না করে সবাই মিলে খেয়ে একসঙ্গে বৃষ্টির জন্য আরাধনা করত। সেই সময় থেকেই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এই মেলাগুলো অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। আগে এই মেলাগুলোকে মাদার পীরের মেলা অথবা নিশানের মেলা বলা হতো। পরবর্তীতে এই মেলাগুলোকে ঘিরে এলাকার প্রতিটি গ্রামে উৎসবে মেতে ওঠে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। মেলা উপলক্ষে জামাই মেয়েসহ নিকটাত্মীয় স্বজনদের ধুমধাম করে খাওয়ানো হয়। যার ফলে পরবর্তীতে এই মেলাগুলোর নাম হয় জ্যৈষ্ঠ জামাই মেলা। বর্তমানে বোরো ধান কাটার পর ধনী-গরিব সবার হাতে থাকে টাকা-পয়সা। সে কারণে জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত উপজেলার প্রায় ৫০টি স্থানে একদিনের মেলা অনুষ্ঠিত হবে। মেলাগুলোর মধ্যে ঢুকলেই মনে হবে বাংলা সংস্কৃতির অনেক কিছু এখনো হারিয়ে যায়নি। প্রতিটি মেলাতে চলে বাঙালির চিরায়ত লাঠি খেলা, পাতা খেলা, চালুন খেলাসহ বিনোদনমূলক কতই না খেলা। এসবের পাশাপাশি রয়েছে শিশুদের জন্য নাগরদোলা ও চরকি। মেলা উপলক্ষে প্রতিটি গ্রামে চলছে গৃহিণীদের ঘর সাজানো ও ধোয়ামোছার কাজ। যেখানে মেলা হবে তার আশপাশের গ্রামগুলোতে একদিন আগেই দাওয়াত করে আনা হয় জামাই, মেয়ে ও নিকটাত্মীয়দের। তাদের খাওয়ানো হয় মধু মাস জ্যৈষ্ঠের বিভিন্ন ফল ফলাদি। কাহালু উপজেলায় জ্যৈষ্ঠ মাসজুড়েই থাকবে জ্যৈষ্ঠ জামাই মেলার উৎসবের আমেজ। সব বয়সের মানুষের মধ্যেই থাকে মেলাতে খরচের প্রতিযোগিতা। আত্মীয়স্বজনদের যে যত ভালো সমাদর করতে পারে তার প্রশংসা হয় লোকজনের মধ্যে। মেলাতে বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত পরিচিত লোক দেখলেই স্থানীয়রা তাকে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে সমাদর করেন। এই মেলা উপলক্ষেই গোটা কাহালু উপজেলা যেন হয়ে ওঠে সব শ্রেণির মানুষের মিলন মেলা। এলাকাবাসীর প্রত্যাশা প্রাচীন এই মেলাগুলোকে যেন কোনো অপসংস্কৃতি গ্রাস করতে না পারে।
শিরোনাম
- আমার ছেলের খুনীর ফাঁসি যেন দেখে যেতে পারি: আবু সাঈদের বাবা
- দিল্লি বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৫, গ্রেফতার আরও এক কাশ্মীরি
- মালয়েশিয়ায় শর্টপিচ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন সাইবারজায়া ইউনিভার্সিটি
- আফ্রিকার ছয় দেশে আছে রুশ সেনার উপস্থিতি: রাষ্ট্রীয় টিভি
- ‘খালেদা জিয়াকে দেশের সেরা জয় উপহার দিতে চাই’
- উইঘুর যোদ্ধাদের চীনের কাছে হস্তান্তর করবে সিরিয়া
- ‘একটি দল ক্ষমতায় যেতে প্রলাপ বকছে’
- সিরিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় পাশে থাকবে চীন
- বগুড়ায় কোলগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে জরাজীর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান
- শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে যা বলল ভারত
- মোংলায় জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসকরণ বিষয়ক সমন্বয় সভা
- আকাশ প্রতিরক্ষা ও যুদ্ধবিমান চুক্তি চূড়ান্ত করতে ফ্রান্সে জেলেনস্কি
- অস্ট্রেলিয়ায় বিএনপির জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উদযাপন
- ভারতের চা, মশলা, আমসহ কয়েকটি পণ্যে শুল্ক প্রত্যাহার করলেন ট্রাম্প
- নওগাঁর মান্দায় ধানের শীষে ডা. টিপুর নির্বাচনী পথসভা
- পাঙ্গাস পোনা শিকারের দায়ে জেলের কারাদণ্ড
- পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি মিলন কারাগারে
- রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক
- নির্বাচনের আগেই হাসিনাকে দেশে এনে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দাবি সারজিসের
- কলাপাড়ায় অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে ৫ জন হাসপাতালে