প্রতি বছর ৬ এপ্রিল জাতীয় ক্রীড়াদিবস হিসেবে ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতিসংঘ ৬ এপ্রিল ইন্টারন্যাশনাল স্পোর্টস ডে হিসেবে পালন করে। আমরাও সে দিনটা ক্রীড়াদিবস হিসেবে পালন করতে পারি। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে বাংলাদেশের নাম উঠে এসেছে। পৃথিবীর সব দেশ এখন রয়েল বেঙ্গল টাইগারদের হিসাব করে চলে। ইনশাল্লাহ একদিন আমরা বিশ্বকাপ জিতবই। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে গতকাল দুপুরে দেশসেরা ক্রীড়াবিদদের মধ্যে ২০১০, ২০১১ ও ২০১২ সালের জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ ঘোষণা দেন। অনুষ্ঠানে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক ও আবাহনী ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ শেখ কামাল এবং বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানসহ মোট ৩২ জন ক্রীড়া ব্যক্তিত্বকে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার প্রদান করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকাসক্তি থেকে যুবসমাজকে ফিরিয়ে আনতে খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, আমাদের দেশের যুবসমাজ আজ নানাভাবে বিপথগামী হচ্ছে। মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ডের দিকে তারা পা বাড়াচ্ছে। যুবসমাজকে ক্রীড়া এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় রাখতে পারলেই সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকের ভয়াবহতা থেকে তাদের মুক্ত রাখা যাবে। একই সঙ্গে নির্মূল হবে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ। কারণ ক্রীড়া এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড যুবসমাজের মাঝে শৃঙ্খলাবোধ, অধ্যবসায়, দায়িত্ববোধ ও কর্তব্যপরায়ণতা এবং দেশপ্রেম জাগ্রত হয়। তাই যুবসমাজকে যতবেশি খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করতে পারব ততবেশি তারা শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ থাকবে। ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন সিকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জাহিদ আহসান রাসেল, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী আকতার উদ্দিন আহমেদ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, খেলাধুলা আমাদের দেশের জন্য একান্তভাবে প্রয়োজন। কারণ, খেলাধুলার মাধ্যমে ছেলেমেয়েদের একটা শৃঙ্খলাবোধ, অধ্যবসায়, দায়িত্ববোধ, কর্তব্যবোধ এবং দেশপ্রেম জাগ্রত হয়। যত বেশি খেলাধুলার সঙ্গে আমরা আমাদের ছেলেমেয়েদের সম্পৃক্ত রাখতে পারব, তারা তত সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হবে। তারা চিন্তা, মন, মননে অনেক বেশি শক্তিশালী হবে। অনেক বেশি উন্নত হবে। কারণ, একটা সুস্থ দেহ থাকলে, সুস্থ মনও থাকবে। তখন আর এই মনটা এদিক-ওদিক যাবে না। সব উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের কাজ চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে মিনি স্টেডিয়াম আমরা করে দেব। সেখানে বারো মাসই খেলাধুলা হতে পারবে। সম্পূর্ণ আলাদা মাঠ হবে। ছোট্ট একটু ব্যবস্থা থাকবে। খেলাধুলায় প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, প্রত্যেক বিভাগে একটি করে বিকেএসপি হবে। বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) এখন শুধু ঢাকার সাভারে আছে। তিনি বলেন, গ্রামের কিছু খেলা বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এই খেলাগুলো চালু করতে হবে। দেশীয় খেলাগুলো ফেলে দিলে চলবে না। শেখ হাসিনা বলেন, প্রত্যেক বিভাগীয় শহরে আবাসনসহ আন্তর্জাতিক ভেন্যু যাতে হতে পারে, সে ব্যবস্থা আমরা করে দেব। তিনি বলেন, ক্রিকেটের জন্য একটি আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম করা প্রয়োজন। পূর্বাচলে আধুনিক স্টেডিয়াম করার পরিকল্পনা আছে। এ সময় কক্সবাজারে একটি ফুটবল স্টেডিয়াম নির্মাণের কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী। ক্রিকেটের উন্নয়নে সরকারের ভূমিকা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের সাফল্যের বীজবপন করি। ১৯৯৭ সালে প্রথমবারের মতো আইসিসি বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলার যোগ্যতা অর্জন করে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রশংসা ও বিশ্বকাপ জয়ের প্রত্যাশা পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, সত্যি কথা বলতে কী সব দেশ ক্রিকেটে রয়েল বেঙ্গল টাইগারকে হিসাব করে চলে। রয়েল বেঙ্গল টাইগাররা ঠিক রয়েল বেঙ্গল হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছে। ইনশাল্লাহ আমরা একদিন বিশ্বকাপ জয় করব। সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মাশরাফি বিন মর্তুজা, মুশফিকুর রহিমের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, মুস্তাফিজ তো নতুন এবং ইয়ং। তার নামই হয়ে গেছে কাটার মাস্টার। ফুটবলে মেয়েদের কৃতিত্বের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেয়েরা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। আমার খুবই ভালো লেগেছে। কারণ, ১৯৯৬ সালে আমরা যখন মেয়েদের ফুটবল টিম মাঠে নামাই, আমরা নাম দিয়েছিলাম প্রমীলা ফুটবল। তখন অনেক জেলায় এই খেলা হতে পারে নাই। বিশেষ করে রাজশাহীতে যখন মেয়েরা ফুটবল খেলতে যায়, তখন সেখানে প্রচণ্ড বাধা আমরা পেয়েছিলাম। এখন আর সে পরিবেশ নেই। আমরা সে পরিবেশ থেকে উত্তরণ ঘটিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেয়েরা যা পারছে, ছেলেরা তা পারছে না। মেয়েরা দশ গোল দেয়। ছেলেরা পাঁচ গোল খেয়ে আসে। আমি বলব না যে, তারা পারবে না। তারা ভবিষ্যতে পারবে, হাসতে হাসতে বলেন শেখ হাসিনা।
শিরোনাম
- ইলিশের দাম নির্ধারণের প্রস্তাবে প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদন
- পরকীয়া প্রেমিকা ও তার স্বামীর হাতে খুন হলেন প্রেমিক!
- ঢামেকের সামনের ফুটপাতে মিলল বৃদ্ধার মরদেহ
- হোয়াটসঅ্যাপে নতুন ফিচার, স্ক্যান করে পাঠানো যাবে নথিপত্র
- যাত্রাবাড়ী থেকে হত্যা মামলার দুই আসামি গ্রেফতার
- ২ ঘণ্টা পর টিকাটুলির ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে
- দাঁড়িয়ে থাকা বোয়িং বিমানে আঘাত করলো লাগেজ ট্রলি
- শরীরে ‘ইসলামিক’ ট্যাটু করা কি জায়েজ
- খেলাধুলার মানোন্নয়নে ক্রীড়া সাংবাদিকতার ভূমিকা
- পর্যটনের স্বপ্ন ফাইলেই বন্দি
- স্বস্তির জয়ে ক্লাব বিশ্বকাপের শেষ আটের মঞ্চে রিয়াল
- উড্ডয়নের ৭ মিনিট পরই বিধ্বস্ত বিমান, নিহত ৬
- ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
- ভরপেট খেলেও মোটা হবেন না, জানুন কোন খাবারগুলো নিরাপদ
- দাম কমলো ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের, আজ থেকেই কার্যকর নতুন প্যাকেজ
- টিএসসিতে রিকশার ভেতরেই মিলল চালকের মরদেহ
- চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার জাকির হোসেন বরখাস্ত
- ১৯৭৩ সালের পর ডলারের সবচেয়ে বড় পতন: সংকটে যুক্তরাষ্ট্র
- প্রেমে ব্যর্থ হলে বাথরুম পরিষ্কার করেন যে অভিনেতা
- কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নতুন নির্দেশনা