সোমবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

বিলুপ্তির পথে কালিজিরা ধান

এম আবু সিদ্দিক, চরফ্যাশন (ভোলা)

বিলুপ্তির পথে কালিজিরা ধান

ভোলার চরফ্যাশনে এক সময় কৃষকদের মধ্যে জনপ্রিয় ছিল কালিজিরা ধান। প্রায় ২০ বছরের ব্যবধানে এ ধানের জায়গা দখল করে নিয়েছে উফশী জাতের ধান। শুধু কালিজিরা নয়, ক্রমবর্ধমান খাদ্যের চাহিদা মেটাতে সারা দেশ থেকেই হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতিবান্ধব হাজারও জাতের দেশি ধান। কালিজিরা, কাশিয়াবিন্নি, সরুসহ বিভিন্ন জাতের সুগন্ধি চিকন চাল দিয়ে তৈরি হয় পোলাও, বিরানি, খিচুড়ি, শিন্নি-পায়েস, ফিরনি ও জর্দাসহ আরও সুস্বাদু মুখরোচক নানা ধরনের খাবার। কিন্তু এসব এখন কালের স্মৃতি। হাট-বাজারে এখন আর এ চাল পাওয়া যায় না। বিলুপ্তের পথে এ অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী এ সুগন্ধি ধান। চরফ্যাশন উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ওই সব জাতের ধান আবাদকারী কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ জাতের ধানের ফলন হয় কম। বিঘাপ্রতি অন্য জাতের ধান যেখানে ১৫ থেকে সর্বোচ্চ ২০ মণ উৎপন্ন হয়, সেখানে এ জাতের ফলন হয় সর্বোচ্চ ৮ মণ পর্যন্ত। তবে বাজারে দাম দ্বিগুণ পাওয়া যায়। সার, সেচ ও পরিচর্যাও লাগে কম। সে হিসেবে আবাদে লোকসান হয় না বললেও চলে। এখনো গ্রামের গৃহস্থ পরিবারের কাছে এ ধানের কদর যথেষ্ট। কৃষি অফিসের তথ্য মতে, এ জাতের ধান আগে বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে আবাদ হতো। কিন্তু এসব ধানের উৎপাদন কম হওয়ায় কৃষকরা বীজ আমদানির ওপর নিভর্রশীল হয়ে পড়েন। এর ফলে হারিয়ে যাচ্ছে এক সময়ের জনপ্রিয় কালিজিরা কাশিয়াবিন্নি, সরু, বেগুনবিচি, জামাইভোগ, দাঁদখানি ও খৈয়া মটরসহ নানা জাতের দেশি ধান। কৃষি বিভাগের মাধ্যমে এ জাতের ধান আবাদে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা বা প্রদর্শনী প্লট প্রকল্প গ্রহণ করলে ধীরে ধীরে বিলুপ্তির হাত থেকে তা ফেরানো সম্ভব হবে।

সর্বশেষ খবর