শুক্রবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

থানায় বিবস্ত্র করে নির্যাতন

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের ধুরাইলের ঝরনা বেগমকে (৪০) গত ১১ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে ওসি কামরুল ইসলাম মিয়া ধুরাইল বাজার থেকে ধরে থানায় নিয়ে তার কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ওই দিন রাত ৩টার দিকে ঝরনাকে ওসির রুমে নিয়ে ধুরাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওয়ারেস উদ্দিন সুমন এবং ওসি বিবস্ত্র করে শারীরিক নির্যাতন করেন। পরদিন রাতেও  তাকে নির্যাতন করা হয়। পরে তার বিরুদ্ধে হালুয়াঘাট থানায় ৪টি গরু চুরির মামলা দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে হালুয়াঘাট থানার ওসি কামরুল ইসলাম মিয়ার বিরুদ্ধে ময়মনসিংহের আদালতে ঝরনা বেগম নারী নির্যাতনের মামলা করেছেন।

জানা যায়, গত ১১ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে হালুয়াঘাটের ধুরাইল বাজারে সিরাজুল ইসলামের দোকানের সামনে থেকে ঝরনা বেগমকে ধরে নিয়ে যান ওসি কামরুল ইসলাম মিয়া। থানায় নিয়ে তার কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ওই দিন রাত ৩টার দিকে তাকে ওসির রুমে নিয়ে বিবস্ত্র করে ধুরাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওয়ারেস উদ্দিন সুমন এবং ওসি শারীরিক নির্যাতন করেন। পরদিন রাতেও তাকে নির্যাতন করা হয়। ১৩ আগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। পরদিন জেলহাজতে ঝরনা অচেতন হয়ে পড়লে কারা হাসপাতালের মাধ্যমে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৮ দিন চিকিৎসা শেষে তাকে ফের হাজতে নেওয়া হয়। পরে তার বিরুদ্ধে হালুয়াঘাট থানায় ৪টি গরু চুরির মামলা দেওয়া হয়। ঝরনা বেগম তাকে নির্যাতনের ব্যাপারে গত ২১ ডিসেম্বর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন। গত ২৭ ডিসেম্বর ৫ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক হাফিজ আল আসাদ জেলা পুলিশ সুপারকে ১৫ দিনের মধ্যে এ ব্যাপারে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন। মামলায় ওসি ছাড়াও ধুরাইল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ওয়ারেস উদ্দিন সুমনসহ আরও ৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। ভুক্তভোগী ঝরনা বেগম জানান, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান ওয়ারেস উদ্দিন সুমনের পক্ষে কাজ না করায় আমার ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। এখন আমি আত্মগোপনে আছি। চেয়ারম্যান এবং ওসি আমার পরিবারের লোকজনকেও নানাভাবে হয়রানি করছেন। অভিযুক্ত ধুরাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওয়ারেস উদ্দিন সুমন জানান, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। ঝরনাকে নির্যাতন করার প্রশ্নই ওঠে না। হালুয়াঘাট থানার ওসি কামরুল ইসলাম মিয়া জানান, চুরি মামলায় ঝরনা বেগমকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছিল। তাকে থানায় রেখে নির্যাতনের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন। জেলা ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার নূরে আলম জানান, আদালতের নির্দেশ আমরা এখনো পাইনি। নির্দেশ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর