শুক্রবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

ঘরেই রুপি বানানোর মেশিন!

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঘরেই রুপি বানানোর মেশিন!

ঘরেই রুপি বানানোর মেশিন! ভারতীয় জাল রুপি তৈরির টাঁকশাল। প্রতি মাসে ৫০-৬০ লাখ রুপি তৈরি করে বাজারে ছাড়া হতো। এতে মাসিক আয় হতো দেড় থেকে ২ লাখ টাকা। এক দিন-দুই দিন নয়, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে এভাবেই রুপি তৈরি করে আসছিলেন লিয়াকত আলী। জাল রুপি তৈরি করতে গিয়ে একাধিকবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেফতারও হন তিনি। তার বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা হয়। আদালত থেকে জামিনে বেরিয়েও আসেন। কিন্তু জাল রুপি তৈরির নেশা কাটাতে পারেননি। সর্বশেষ বুধবার রাতে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা উত্তরপাড়ার একটি বাড়ি  থেকে লিয়াকতকে গ্রেফতার করেন র‌্যাব-৩-এর সদস্যরা। এ সময় তার কাছ থেকে ভারতীয় ১০ লাখ জাল রুপি, রুপি তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আরেকটি বাড়ি থেকে সহযোগী জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেফতার করা হয়। গতকাল দুপুরে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৩-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল ইমরানুল হাসান বলেন, জাল মুদ্রা তৈরির মূল হোতা ছিলেন ছগির মাস্টার। শেয়ারবাজারে ধসের পর তিনি জাল মুদ্রা তৈরির সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। ছগির মাস্টারের সহযোগী হিসেবে তখন লিয়াকত এই চক্রের সঙ্গে কাজ শুরু করেন। পরে ২০০৭ সালে লিয়াকত নিজেই কেরানীগঞ্জে নিজের ভাড়া বাসায় জাল মুদ্রা তৈরির কারখানা ও সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। জিজ্ঞাসাবাদে লিয়াকত জানান, বাংলাদেশি জাল মুদ্রা তৈরি এবং বাজারজাতকরণ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ভারতীয় জাল মুদ্রা তৈরিতে ঝুঁকে পড়েন তিনি। প্রতি মাসে ৫০-৬০ লাখ রুপি তৈরি করে বাজারে ছাড়া হতো। ভারতীয় ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট তৈরি সহজ হওয়ায় তিনি এসব নোটই তৈরি করতেন। ১ লাখ জাল রুপি বিক্রি করতেন ১২ হাজার টাকায়। এতে তার মাসিক আয় হতো দেড় থেকে ২ লাখ টাকা। স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে রাজধানীর বিভিন্ন মানি এক্সচেঞ্জ ও সীমান্তবর্তী এলাকায় এসব জাল রুপি সরবরাহ করা হতো। তবে যেসব মানি এক্সচেঞ্জে জাল রুপি সরবরাহ করত সেগুলোর কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। লিয়াকত কার কাছে জাল রুপিগুলো সরবরাহ করতেন, তা অনেক ক্ষেত্রে নিজেই জানতেন না। তিনি ছিল জাল রুপির পাইকারি বিক্রেতা। এর সঙ্গে জড়িত কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে; যা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর