মঙ্গলবার, ২২ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা
কেমন বাজেট চাই

করহার কমিয়ে রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে

—ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ

রুহুল আমিন রাসেল

করহার কমিয়ে রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে

আগামী বাজেটে করহার কমিয়ে রাজস্ব বাড়াতে হবে বলে অভিমত পোষণ করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ। বাজেটে করহার কমানোর যে ইঙ্গিত সরকার দিয়েছে, তাকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, এবার রাজস্ব আদায়ে মনিটরিং জোরদার করতে হবে। করদাতা বাড়াতে আরেকটি অভিযান জরুরি হয়ে পড়েছে। দেশের বর্তমান আর্থ-সামাজিক বাস্তবতায় ব্যক্তি-শ্রেণির করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা ২ লাখ ৫০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৪ লাখ টাকা নির্ধারণের পরামর্শ দিয়েছেন সাবেক এই আমলা। আসছে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট সামনে রেখে গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সরকারের সাবেক সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, সবাই বলেন আমাদের দেশে করপোরেট করহার বেশি, কিন্তু বাস্তবে খুব একটা বেশি নয়। বাংলাদেশের চেয়েও অনেক দেশ আছে, যেখানে করপোরেট করহার অনেক বেশি। করপোরেট করহার কমানো হলে আরও বেশি করদাতা উৎসাহিত হবেন। সরকারের রাজস্ব বাড়বে। তবে এখন রাজস্ব আয়ে সরকারের নজরদারি বাড়াতে হবে অধিক হারে। আশা করছি নজরদারি বাড়ানোর একটা কর্মসূচি আসছে বাজেটে থাকবে।

সাবেক এই আমলার মতে, করদাতাদের যেমন ছাড় দেওয়া হবে তেমন যেন যত প্রকার মনিটরিং আছে তার সব প্রয়োগ করে করদাতার সংখ্যা বাড়ানো হয়। এনবিআরের সাবেক এই চেয়ারম্যান বলেন, ভিক্ষুক থেকে শুরু করে সবাই ভ্যাট দেয়। কিন্তু সরকার সে ভ্যাট সঠিকভাবে পায় না। এ ক্ষেত্রে ভিক্ষুক যে ভ্যাট দিচ্ছে, তা সরকারের পাওয়া নিশ্চিত করতে হবে। আর যারা রাজস্ব ফাঁকি দেয়, তাদের ফাইল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। পাশাপাশি বকেয়া রাজস্ব আদায়ে আদালতে যেসব মামলা আছে, তা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিশেষভাবে জোর দিতে হবে। ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ দেশি শিল্প সুরক্ষার তাগিদ দিয়ে বলেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) চুক্তি যেমন বাংলাদেশকে মেনে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হবে তেমন সম্পূরক শুল্ককর বা এসডি প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে দেশি শিল্প খাতের সুরক্ষায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। সম্পূরক শুল্ককর প্রত্যাহারে দেশি শিল্পে কোন ধরনের প্রভাব পড়বে, তার চ্যালেঞ্জ কী হবে তা বিবেচনা করা দরকার। তিনি বলেন, বাজেট মূলত সরকারের মুখ্য পরিকল্পনার দলিল। বস্তত জনগণের প্রতি সরকারের আয়-ব্যয়ের দায়বদ্ধতার দলিল হিসেবেই বাজেটকে দেখার সুযোগ রয়েছে। তার মতে, বাজেট প্রণয়নে অন্যতম পদ্ধতিগত সীমাবদ্ধতা হলো ওপর থেকে আসা বাজেটের প্রাক্কলন ও নীতিনির্দেশনার আলোকে হিসাব মিলিয়ে নিচ থেকে বাজেট তৈরি করতে হয়। এভাবে আরোপিত বাজেট বাস্তবায়নে সমস্যা হয়। এতে বাজেটের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যায় না। ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বাজেট বাস্তবায়নে নজর দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, দক্ষতা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে বাজেট বাস্তবায়ন করা উচিত।

সর্বশেষ খবর