মঙ্গলবার, ১০ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

মন্ত্রিসভায় জাতীয় কৃষিনীতির খসড়া অনুমোদন

নিজস্ব প্রতিবেদক

কৃষির উন্নয়নে ন্যানো প্রযুক্তি ব্যবহার, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ সেবা, উদ্ভাবনী সম্প্রসারণ প্রযুক্তি, প্রযুক্তি ব্লক স্থাপন, বছরব্যাপী ফল উৎপাদনসহ আরও বেশকিছু বিষয় সংযোজন করে মন্ত্রিসভা জাতীয় কৃষিনীতি-২০১৮ এর খসড়া অনুমোদন করেছে। একই সঙ্গে মহাপরিচালক নিয়োগ দেওয়ার বিধান রেখে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি আইন-২০১৮ এর খসড়াও অনুমোদন করা হয়েছে। সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে গতকাল এসব খসড়া অনুমোদিত হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানান, ২০১৩ সালের কৃষি নীতিকে হালনাগাদ করে নতুন এই কৃষি নীতি করা হয়েছে। এতে ন্যানো প্রযুক্তি সংক্রান্ত বিষয়টি যুক্ত করা হয়েছে। নীতিমালায় ন্যানো প্রযুক্তিকে গবেষণার বিষয় হিসেবে দেখানো আছে।  ন্যানো প্রযুক্তি হচ্ছে পদার্থকে আনবিক ও পারমাণবিক পর্যায়ে পরিবর্তন ও নিয়ন্ত্রণ করার কৌশল। এক মিটারের ১০০ কোটি ভাগের এক ভাগকে বলা হয় ১ ন্যানোমিটার। পদার্থের ভিতরে ওই মাত্রার ক্ষুদ্র পর্যায়ে কাজ করে বলে এ প্রযুক্তির নাম ন্যানো। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, খসড়া কৃষি নীতিতে ন্যানো প্রযুক্তির বিষয়ে বলা হয়েছে, প্রাথমিক পর্যায়ে ফসলের রোগ, জাতভিত্তিক পুষ্টি চাহিদা নির্ণয় ও পুষ্টি আহরণ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ন্যানো প্রযুক্তি ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হবে। ন্যানো সেন্সর ব্যবহারের মাধ্যমে ভূমির গুণাগুণ পর্যবেক্ষণ ও উৎপাদন বৃদ্ধির কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। কৃষিতে ভারী ধাতুর উপস্থিতি শনাক্ত করা এবং শোধনসহ ন্যানো প্রযুক্তির সার, বালাইনাশক উদ্ভাবন ও ব্যবহারের মাধ্যমে উপকরণ দক্ষতা অর্জনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। তিনি জানান, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ সেবা, উদ্ভাবনী সম্প্রসারণ প্রযুক্তি, প্রযুক্তি ব্লক স্থাপন, বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের বিষয়গুলোও নতুন নীতিমালায় সংযোজন করা হয়েছে। এর পাশাপাশি ফসলের উৎপাদনশীলতা ও কৃষকের আয় বৃদ্ধি, শস্য বহুমুখীকরণ, পুষ্টিসমৃদ্ধ নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন করা। এ ছাড়া দক্ষ প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা, টেকসই প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন করাই মূল উদ্দেশ্য। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, বৈঠকে বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে পরিচালকের বদলে একজন মহাপরিচালক নিয়োগের বিধান রেখে এ সংক্রান্ত আইনের খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। নতুন আইন অনুমোদন পেলে একাডেমির পরিচালনা ও প্রশাসনের দায়িত্ব ন্যস্ত হবে একটি ব্যবস্থাপনা বোর্ডের ওপর। একাডেমি যেসব ক্ষমতা প্রয়োগ ও কাজ করতে পারবে, বোর্ডও তা পারবে। এই ব্যবস্থাপনা বোর্ড হবে ১৭ সদস্যের। তিনি জানান, শিশু একাডেমিতে এত দিন একজন পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হতো। নতুন আইন পাস হলে মহাপরিচালক নিয়োগ দেওয়া হবে। শিল্প, সাহিত্যে অবদান আছে এমন ব্যক্তিরা মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ পাবেন। সরকারি কর্মকর্তাও মহাপরিচালক পদে নিয়োগ পেতে পারবেন। তবে মহাপরিচালক নিয়োগের শর্ত নির্ধারণ করবে সরকার। এ ছাড়া আইনে ‘সম্মানিত ফেলো’ নামে ফেলোশিপ চালু করার প্রস্তাব করা হয়েছে। শিশুর সামগ্রিক বিকাশ ও উন্নয়নে সম্পৃক্ত ব্যক্তিকে, ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান, শিল্পকলা অথবা সামাজিক বিশেষ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বিধি দিয়ে নির্ধারিত পদ্ধতিতে সাত সদস্যের একটি কমিটি করে ফেলো হিসেবে ঘোষণা করা হবে।

সর্বশেষ খবর