শিরোনাম
শুক্রবার, ৪ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

ফিঙ্গের জ্ঞাতি ভাই ভীমরাজ

আলম শাইন

ফিঙ্গের জ্ঞাতি ভাই ভীমরাজ

অবাসিক পাখি। চিরসবুজ বনের বাসিন্দা। স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ কিছুটা প্রিয়। বৃক্ষরাজির মধ্যে বাঁশবন বেশি পছন্দের। বন উজাড়ের ফলে সুলভ থেকে অসুলভ হয়ে পড়ছে প্রজাতিটি। এদের লেজ ভারী চমৎকার; খানিকটা লম্বা। দেখার মতোই বটে। লেজের বর্ধিত অংশটুকু কেটে ফেললে যে কেউ ফিঙ্গে বলে ভুল করবেন। মূলত ফিঙ্গে গোত্রের পাখি হলেও ওদের মতো অত হিংস্র নয়। ঝগড়া-ঝাটি এদের পছন্দ নয়। গাছ-গাছালিতে বসেই অলস সময় পার করে। ঠিক ওই অবস্থায়ই কীটপতঙ্গের উপর তীক্ষè নজর রাখে। দৃষ্টিতে পড়লেই ছোঁ মেরে শিকার করে। ছোট দলে বিচরণ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। কণ্ঠস্বর ভারী কর্কশ। ডাকে ‘চেক-চেক-চিউক-ক্যাঁচ-চ্যাঁক’ সুরে। মন ভালো থাকলে মিষ্টি সুরে শিস দেয়। খুব সহজেই অন্য প্রজাতির পাখির স্বর হুবহু নকল করতে পারে। এ পাখির বাংলা নাম, ‘ভীমরাজ’। ইংরেজি নাম, ‘গ্রেটার র‌্যাকেট টেইলড্ ড্রঙ্গো’। বৈজ্ঞানিক নাম, Dicrurus paradiseus।

 অনেকের কাছে রাজফিঙ্গে বা ধীরাজ নামেও পরিচিত। এ প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য ৩৫ সেন্টিমিটার। অপরদিকে লেজ ১৫ সেন্টিমিটার এবং লেজের বাইরের পালক ৪৮ সেন্টিমিটার লম্বা। গায়ের পালক নীলাভ কালো। ডানার তলায় সামান্য সাদা ছোপ। চোখের মণি লাল। মাথায় কালো ঝুঁটি। অপ্রাপ্ত বয়স্ক পাখিদের মাথায় ঝুঁটি থাকে না। থাকে না লেজের ডগার বাড়তি পালকও। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ সব গজায়। ঠোঁট ও পা কালো। চোখের মণি লাল। লেজের ছেঁড়া পালক দুটি বেশ আকর্ষণীয়। লেজের প্রান্ত থেকে ফিতা আকৃতির দুটি পালক অনেকখানি লম্বা হয়ে ঝুলে পড়েছে। পালকের মাথাটা পাতাকৃতির হয়ে মোচড়ে থাকে। এদের প্রধান খাবার কীটপতঙ্গ। উড়ন্ত উঁইপোকা উড়ে উড়ে শিকার করে। ফুলের মধু এদের খুব পছন্দ। প্রজনন সময় এপ্রিল থেকে আগস্ট। গাছের দুডালের ফাঁকে পেয়ালা আকৃতির বাসা বানায়। বাসা বানাতে উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে ঘাস, চিকন কাঠি, মাকড়সার জাল। বাসা বানানো হলে বাইরের দিকে শ্যাওলা দিয়ে লেপ্টে দেয়। ডিম পাড়ে ৩-৪টি। ফুটতে সময় লাগে ১৫-১৮ দিন।

সর্বশেষ খবর