শুক্রবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
রা জ নী তি

এবার সরকার ও বিরোধী দলে থাকার দুর্নাম ঘোচাতে চায় জাতীয় পার্টি

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

গত দশম জাতীয় সংসদে একইসঙ্গে সরকার এবং বিরোধী দলে থাকার দুর্নাম ঘোচাতে চায় জাতীয় পার্টি (জাপা)। তাই এবারের সংসদে সন্ত্রাস ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে চায় দলটি। সে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দলীয় এমপিদের সেভাবেই প্রস্তুতি  নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি এরই মধ্যে দলের কো- চেয়ারম্যান ও সংসদ উপনেতা জিএম কাদেরকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি টিম গঠন করেছে। তাদের কাজ সরকারের নানা অনিয়মের দলিল সংগ্রহ করা।  পাশাপাশি এরশাদের  শাসনামলের উন্নয়ন তুলে ধরে সংসদে সরকারকে ঘায়েলের চেষ্টা করা হবে। একই সঙ্গে রাজপথেও নানা ইস্যুতে সক্রিয় থাকবে দলটি।

জানতে চাইলে পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমরা জবাবদিহিমূলক সরকার গঠনে কাজ করব। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি হবে প্রকৃত বিরোধী দল। প্রশ্নবিদ্ধ বিরোধী দল হবে না। সংসদে জাতীয় পার্টি গঠনমূলক সমালোচনা করে সরকারের ভুলত্রুটি ধরিয়ে দেবে, বঞ্চিত ও অবহেলিত মানুষের কথা বলবে। তিনি বলেন, দেশের মানুষ সহিংস রাজনীতি পছন্দ করে না। জাতীয় পার্টি সংসদে কতটা শক্তিশালী বিরোধী দলের ভূমিকা রাখবে, তা কাজের মাধ্যমে প্রমাণ হবে। আগামী ৩০ জানুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে। এদিকে বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে এইচ এম এরশাদ সংসদ অধিবেশনে যোগদানের জন্য তীব্র আকাক্সক্ষা থাকলেও তাঁর শারীরিক অসুস্থতায় দলীয় নেতারা উদ্বিগ্ন। তাঁকে অধিকাংশ সময় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালেই থাকতে হয়। চিকিৎসার জন্য আগামী সপ্তাহে আবারও সিঙ্গাপুর যাবেন তিনি। ৩০ জানুয়ারির আগেই দেশে ফেরার কথা রয়েছে। পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও এইচ এম এরশাদের একান্ত সচিব মেজর অব. খালেদ আখতার জানিয়েছেন, পার্টির চেয়ারম্যানের রক্তের হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ায় আগামী সপ্তাহে তিনি আবারও চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যাবেন। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর জাতীয় পার্টির নীতিনির্ধারক পর্যায়ের কয়েকজন নেতা জানিয়েছিলেন, মহাজোটে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেবে জাতীয় পার্টি বিরোধী দলে থাকবে কিনা। পার্টির বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য মন্ত্রিসভায় থাকার পক্ষেও জোরালো মত দিয়েছিলেন। কিন্তু এইচ এম এরশাদ বিরোধী দলে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। পার্টির চেয়ারম্যানের এই সিদ্ধান্ত সবাই মেনে নেন। হরতাল-অবরোধের মতো ধ্বংসাত্মক কর্মকা  নিষিদ্ধ, প্রাদেশিক সরকার, নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার ও পূর্ণাঙ্গ উপজেলা প্রবর্তনসহ ১৮টি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে একাদশ সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার তৈরি করেছিল দলটি। নির্বাচনের আগে ১৮ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেন এরশাদের বিশেষ সহকারী এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার। ক্ষমতায় না গেলেও প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকায় জাপার ইশতেহারগুলো বাস্তবায়নের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাবে জাপা। জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা একথা জানিয়েছেন। জাপা নেতারা জানান, আমাদের মন্ত্রিসভায় যাওয়ার দরকার দরকার নেই। আমরা নির্ভেজাল বিরোধী দলের ভূমিকাটাই পালন করতে চাই। সংসদে জাতীয় পার্টি কেমন ভূমিকা রাখবে জানতে চাইলে পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, নির্বাচনে প্রমাণ হয়েছে, যারা আগুনসন্ত্রাস করে জনগণ তাদের পছন্দ করে না। সংসদে আমরা দরিদ্র, মেহনতি মানুষের কথা বলব। আমরা গণমানুষের আস্থা অর্জন করে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে প্রত্যাশিত ফলাফল অর্জন করব।

সর্বশেষ খবর