আসছে বাঙালির চিরায়ত ঐতিহ্যের ধারক বাংলা নববর্ষ পয়লা বৈশাখ। মানুষের মঙ্গলযাত্রার এই অসাম্প্রদায়িক উৎসবের প্রস্তুতি এখন শেষ পর্যায়ে। রাজধানীর চারুকলায় ব্যস্ত সময় পার করছেন উৎসব কর্মীরা। এবার উৎসবের মূল অকর্ষণ মঙ্গল শোভাযাত্রার অগ্রভাগে থাকছে মহিষ, পাখি ও ছানা, হাতি, মাছ ও বক, জাল ও জেলে, টেপা পুতুল, মা ও শিশু এবং গরুর আটটি শিল্পকাঠামো। আরও থাকছে পেইন্টিং, মাটির তৈরি সরা, মুখোশ, রাজা-রানীর মুখোশ, সূর্য, ভট, লকেট ইত্যাদি। এ বছর মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতি কাজের দায়িত্বে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ২১তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। রবিঠাকুরের কবিতার পঙ্ক্তি থেকে নির্ধারণ করা হয়েছে এ শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য। এ বছরের প্রতিপাদ্য হলো- ‘মস্তক তুলিতে দাও অনন্ত আকাশে’। মঙ্গল শোভাযাত্রাকে আকর্ষণীয় করে তুলতে দিনরাত কাজ করছেন শিক্ষার্থীরা। মুখোশ, পুতুল, মাটির সরা, মাটির ব্যাংক, টেপাপুতুল, পাখি, হাতপাখাসহ নানা উপকরণ তৈরিতে ব্যস্ত রয়েছেন তারা। কর্মযজ্ঞে সাবেক ও বর্তমান মিলিয়ে প্রায় পাঁচ শতাধিক শিল্পী কাজ করছেন। এসঙ্গে চলছে এসব অনুসঙ্গ বিক্রির পর্ব। নারী-পুরুষ-শিশু-বৃদ্ধসহ সব শ্রেণির মানুষ দল বেঁধে ভিড় করে এগুলো কিনছেন। খোঁজ নিতে গিয়ে জানা গেছে, এবার সিনিয়র শিল্পীদের পেইন্টিং বিক্রি হচ্ছে ৪-৫ হাজার টাকায় এবং জুনিয়রদের ৫০০ থেকে ২০০০ টাকায়। মাটির তৈরি সরা বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকায়, রাজা-রানীর মুখোশ (ম্যাশ) বড় (জোড়া) ৩০ হাজার টাকা, ছোট ১৫ হাজার টাকা, কাগজের মুখোশ ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা, মঙ্গল প্রদ্বীপ ১ হাজার ৫০০ টাকা, পাখি ১০০ থেকে ৩০০ টাকা, লকেট ১০০-১৫০ টাকা, ভট জোড়া ১০০-২০০ টাকা, মাটির তৈরি সূর্য ১৫ হাজার টাকা। মঙ্গল শোভাযাত্রা এবারও পয়লা বৈশাখ ১৪ এপ্রিল রবিবার সকাল সাড়ে ৯টায় চারুকলা অনুষদ থেকে বের করা হবে। এটি হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড় হয়ে পুনরায় চারুকলায় এসে শেষ হবে। ছায়ানট : এদিন ছায়ানটের আয়োজনে থাকছে সকাল সাড়ে ৬টা থেকে রমনার বটমূলে বর্ষবরণের প্রভাতী আয়োজন। এ ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা আয়োজনে বৈশাখ বরণ করবে।