শুক্রবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা
বিশেষজ্ঞদের তাগিদ

ভবনে অগ্নি নিরাপত্তা না থাকলে ব্যবস্থা

নিজস্ব প্রতিবেদক

একের পর এক অগ্নিকা-। ঢাকার কড়াইল বস্তি, চকবাজার, মিরপুরে আগুন। সেসব শোক কাটিয়ে ওঠার আগেই আগুন লাগে বনানীতে। এর দুই দিনের মাথায় গুলশান-১ এর ডিএনসিসি মার্কেটে। এতে বিপুল সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়। এসব আগুনে আটকা পড়া বহু মানুষের উদ্ধার কার্যক্রমে দ্রুত সাড়া দেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। পেশার মর্যাদা রক্ষার পাশাপাশি মানবতার টানে জীবনের ঝুঁকি নেন তারা। এই অগ্নিযোদ্ধাদের নিয়েই গতকাল বিকালে রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ভবন মিলনায়তনে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক আয়োজন করে এক সম্মাননা অনুষ্ঠানের।

সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন পরিচালক আসিফ সালেহর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। আরও উপস্থিত ছিলেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসাইন, পরিচালক (উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ) লে. কর্নেল জুলফিকার রহমান এবং পরিচালক (অপারেশন) মেজর শাকিল নেওয়াজ। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ঢাকাকে নিরাপদ শহরে পরিণত করতে সবার আগে ভবন মালিকদের দায়িত্ব নিতে হবে। তাদের বিল্ডিং কোড যথাযথভাবে মেনে ভবন নির্মাণ করতে হবে। বহুতল ভবনের যেসব উপাদান থাকা প্রয়োজন তা ঠিকমতো রাখতে হবে। আর যদি ফায়ার ফাইটিং সিস্টেম না থাকে তাহলে বড় ভবন, বড় মার্কেট, বড় হাসপাতাল কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া হবে।

অনুষ্ঠানে পুরান ঢাকার নিমতলীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটে যাওয়া বড় বড় অগ্নিদুর্যোগ মোকাবিলায় ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের অবদানের ৪৫ মিনিটের একটি তথ্যচিত্র তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠান শেষে ব্র্যাকের পক্ষ থেকে বনানীর আগুনের ঘটনায় মারা যাওয়া ফায়ারম্যান সোহেল রানার পরিবারকে ৪ লাখ টাকা এবং ফায়ার সার্ভিসের জন্য ৩ লাখ টাকা অনুদানের চেক তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় অগ্নিকা- থেকে রক্ষা পাওয়া মানুষেরা ফুলের তোড়া ও সম্মাননাপত্র তুলে দেন ১০ ফায়ার কর্মীর হাতে। এরা হলেন- ফায়ারম্যান সোহাগচন্দ্র কর্মকার, বিষ্ণুপদ মিস্ত্রী, জাকির হোসেন, কাজী সোহাগ, শহীদুল ইসলাম, জুয়েল মাহমুদ, মফিজুল ইসলাম, আলমগীর হোসেন, নাজির হোসেন, মোক্তার হোসেন।

বক্তব্যে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আমরা এমন অসহায় মৃত্যু আর দেখতে চাই না। যারা উঁচু উঁচু ভবন করেছেন, আগুন থেকে বাঁচার জন্য তাদের সব নিরাপত্তাব্যবস্থা রাখতে হবে। নতুবা কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ফায়ার ডিজি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসাইন বলেন, আমি দেশবাসীকে অনুরোধ করব, অযথা ভিড় করে আমাদের কাজে বিঘ্ন ঘটাবেন না। সবার আগে ভূমিকা রাখতে হবে স্থানীয় জনগণের। আপনাদের সহযোগিতা পেলে আমরা আগুনের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে পারব। ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ) লে. কর্নেল জুলফিকার রহমান বলেন, আমাদের ফায়ার কর্মীরা যথেষ্ট প্রশিক্ষিত। তারা দেশে-বিদেশে বিভিন্নভাবে প্রশিক্ষণ নিয়েছে। আমরা যেগুলোকে বহুতল ভবন বলি সেটার জন্য কিছু উপাদান থাকা প্রয়োজন। অন্যথায় সেটাকে বহুতল ভবন বলা যাবে না। পরিচালক (অপারেশন) মেজর শাকিল নেওয়াজ বলেন, ব্র্যাকের সম্মাননা অনুষ্ঠানে আমাদের মন চাঙা হয়ে গেছে। এর ফলে আমরা ভবিষ্যতে জীবনবাজি রেখে আরও কাজ করতে পারব।

সর্বশেষ খবর