বুধবার, ৮ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা
বাটার মোড়ের জিলাপি

কারিগর বদলালেও স্বাদ বদলায়নি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

কারিগর বদলালেও স্বাদ বদলায়নি

ইফতারে রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নগরীর বাটার মোড়ের জিলাপি। অন্য দিনগুলোতে এর চাহিদা ব্যাপক থাকলেও রমজানে তা বাড়ে কয়েকগুণ। রোজাদারদের কাছে ইফতার উৎসবের সন্ধ্যাকে আরও একটু আনন্দময় করতে এর জুড়ি নেই। ভোজনবিলাসী মানুষ তাই ইফতারে চান বাটার মোড়ের জিলাপি। নগরবাসীদের কাছে ইফতার আয়োজনে আজও সমান কদর আছে এ জিলাপির। সময়ের ব্যবধানে কারিগর বদলেছে, কিন্তু স্বাদ বদলায়নি। সামান্য টক ও মচমচে এ জিলাপি একই স্থানে তৈরি ও বিক্রির ব্যবস্থা আছে। ক্রেতারা ইচ্ছে করলে দোকানে বসেই স্বাদ নিতে পারেন এই সুস্বাদু জিলাপির। আবার প্যাকেটে করে বাড়ি নিয়ে পরিবারের সবাই মিলে উপভোগ করতে পারেন। ব্যবসায়ী তমিজ উদ্দিন ১৯৫৮ সালে শুরু করেন এই জিলাপি বিক্রি। সম্পূর্ণ নিজস্ব রেসিপিতে তিনি জিলাপি বানাতে শুরু করেন। প্রথমদিকে স্থায়ী কোনো নাম ছাড়া শুরু হলেও পরে বাটার মোড়ের নাম অনুসারে এর নাম হয় বাটার মোড়ের জিলাপি। তমিজ উদ্দিনের ব্যবসার বর্তমান মালিক দুই নাতি মো. শামিম ও মো. সোহেল। শামিম জানান, তিন পুরুষ ধরে চলা এই জিলাপির ব্যবসা তারা সফলতার সঙ্গে পরিচালনা করছেন। তাদের এই সফলতার পেছনে আছে তাদের সততা। তারা সব সময় চেষ্টা করেন নির্ভেজাল জিলাপি পরিবেশন করতে। তিনি জানান, বর্তমানে প্রায় সব জায়গাতেই জিলাপি তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে হাইড্রোজসহ আরও নানারকম কেমিক্যাল যা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। কিন্তু তাদের তৈরি জিলাপিতে হাইড্রোজ ব্যবহার করা হয় না। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে জিলাপি তৈরি করেন বলেই মানুষ তাদের জিলাপি খেতে ভালোবাসে। বাটার মোড়ের জিলাপির প্রধান কারিগর কালীপদ মারা গেছেন। তিনি ১৯৭২ সাল থেকে এই জিলাপি তৈরি করছিলেন। এখন অন্য একজন জিলাপি তৈরি করেন। কারিগর বদলালেও স্বাদ বদলায়নি বলে জানালেন নতুন কারিগর সাফাত আলী। ২৩ বছর ধরে সেখানে কাজ করা সাফাত আলী জানান, প্রতিদিন গড়ে ৮০ থেকে ১০০ কেজি জিলাপি বিক্রি হলেও রমজানের সময় তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় প্রায় ২০০ কেজি। গত বছরের মতো এবারও প্রতি কেজি ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দাম নিয়ে তাদের কিছুটা আপত্তি থাকলেও ইফতারের স্বাদ একটু বাড়িয়ে নিতেই তারা বাটার মোড়ের জিলাপি কিনতে আসেন।

সর্বশেষ খবর