শিরোনাম
বুধবার, ১২ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা
গাইবান্ধায় এমপি লিটন হত্যা

অস্ত্র মামলায় সাবেক এমপি কাদেরের যাবজ্জীবন

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যার ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা অস্ত্র মামলার রায়ে ওই আসনের জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি আবদুল কাদের খানকে যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছে আদালত। মামলা দায়েরের তিন বছর চার মাস বিচারকাজ চলার পর গতকাল দুপুরে গাইবান্ধা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক দিলীপ কুমার ভৌমিক আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। বেলা ১১টা ৫০ মিনিট থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ৪৩ পৃষ্ঠার রায় পড়ে শোনান বিচারক। এর আগে সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে গাইবান্ধা জেলা কারাগার থেকে প্রিজন ভ্যানে করে কাদের খানকে আদালতে আনা হয়। ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর সুন্দরগঞ্জের শাহবাজ গ্রামে নিজ বাড়িতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন এমপি লিটন। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২০১৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি কাদের খানকে বগুড়ার বাসা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২৩ ফেব্রুয়ারি কাদের খানের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নিজ গ্রামের বাড়ির উঠানের মাটির নিচ থেকে ৬ রাউন্ড গুলিসহ একটি পিস্তল উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যাকান্ডে  ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় সুন্দরগঞ্জ থানায় ২৫ ফেব্রুয়ারি অস্ত্র আইনে মামলা করে পুলিশ। তদন্ত শেষে ৫ এপ্রিল তদন্ত কর্মকর্তা কাদের খানকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) শফিকুল ইসলাম শফিক জানান, গত ৩০ মে মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণ, যুক্তিতর্ক, শুনানিসহ সব কার্যক্রম শেষে ১১ জুন রায়ের দিন ধার্য করা হয়। সে মোতাবেক বিচারক আজ (১১ জুন) রায় প্রদান করেন। আদালত অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে কাদের খানকে যাবজ্জীবন এবং অবৈধ গোলাবারুদ মজুদ রাখায় ১৫ বছরের কারাদ  দিয়েছে। পিপি আরও জানান, লিটন হত্যায় তিনটি অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে একটি অস্ত্র কাদের খান থানায় জমা দিয়েছেন। অন্য আরেকটি অস্ত্র কাদের খানের ছাপরহাটি গ্রামের বাড়ির উঠান খুঁড়ে ৬ রাউন্ড গুলিসহ উদ্ধার করে পুলিশ। কিন্তু কাদের খানের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তৃতীয় অস্ত্রটির সন্ধান পাওয়া যায়নি। রায় ঘোষণার পরপরই আদালত থেকে কাদের খানকে গাইবান্ধা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। আদালতের দেওয়া রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন পিপি শফিক। এদিকে, রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত নিহত এমপি লিটনের স্ত্রী খুরশিদ জাহান স্মৃতি আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। তিনি মূল মামলা- লিটন হত্যা মামলার বিচারকার্য দ্রুত সম্পন্ন করে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি কামনা করেন। প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর দুর্বৃত্তদের গুলিতে সুন্দরগঞ্জের শাহবাজ গ্রামে নিজ বাড়িতে নিহত হন এমপি লিটন। হত্যা ঘটনায় লিটনের বড় বোন ফাহমিদা কাকলী বাদী হয়ে সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা করেন। হত্যা মামলার প্রধান আসামি কাদের খানসহ চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে আসামিরা আদালতে লিটন হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। বর্তমানে আদালতে হত্যা মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে। এ ছাড়া হত্যাকান্ডে  ব্যবহৃত গুলিভর্তি পিস্তল উদ্ধারের ঘটনায় অস্ত্র আইনে আরও একটি মামলা করেছিল পুলিশ।

সর্বশেষ খবর