মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ফেঁসে যাচ্ছেন ডিআইজি প্রিজন বজলু

চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্তের সুপারিশ

আনিস রহমান

ফেঁসে যাচ্ছেন ডিআইজি প্রিজন বজলু

ফেঁসে যাচ্ছেন ডিআইজি প্রিজন (হেডকোয়ার্টার্স) বজলুর রশীদ। অভিনব কায়দায় বিপুল পরিমাণ ঘুষের টাকা স্ত্রীর কাছে স্থানান্তর, কারা অধিদফতরে নিয়োগ বাণিজ্য, টাকার বিনিময়ে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের পদায়নসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত বজলুকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করাসহ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে সুপারিশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। গঠন হচ্ছে তদন্ত কমিটি। কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে শতাধিক ধাপে কয়েক কোটি টাকা স্ত্রী রাজ্জাকুন নাহারের কাছে পাঠানোর অভিযোগে গতকালই কারা অধিদফতর ডিআইজি প্রিজন বজলুর রশীদকে শোকজ করেছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তার বিরুদ্ধে অ্যাকশন চলমান রয়েছে। ঘটনা তদন্তে দুই সদস্যের একটি কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। সেই সঙ্গে বজলুর রশীদকে তার চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করার সুপারিশ করা হচ্ছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ সূত্র জানায়, এই তদন্ত কমিটির প্রধান করা হচ্ছে যুগ্ম সচিব সৈয়দ বেলাল হোসেনকে। তাকে সহায়তা করবেন উপ-সচিব মনিরুজ্জামান।

কারা অধিদফতর সূত্র জানায়, জামালপুরের বাসিন্দা বজলুর রশীদ ২০০২ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত কারা অধিদফতরের কর্মরত মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নানাভাবে হয়রানি ও নির্যাতন চালিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার পদে দায়িত্ব পালনের সময় ২০০৭ সালের ২৫ নভেম্বর রাতে জঙ্গি নেতা শায়খ আবদুর রহমানের ছেলে নাবিল রহমানকে কারাগার থেকে বের হয়ে যেতে সহায়তা করেন। রাত ৮টার দিকে নাবিল রহমান কারাগারের উঁচু প্রাচীর টপকে বাইরে চলে এলেও স্থানীয় লোকজন তাকে আটক করেন। এ ঘটনার পর বজলুর রশীদকে তার চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে শাস্তি হিসেবে খাগড়াছড়ি কারাগারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে একটি বিভাগীয় মামলা হয় এবং তার পদ অবনমন করা হয়। এ মামলার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে মামলা করেও তিনি হেরে যান। কারা অধিদফতরে বিতর্কিত প্রধান কারারক্ষী হিসেবে পরিচিতি আছে নজরুল ইসলামকে ঢাকায় নিয়ে আসার পেছনেও বজলুর রশীদের ভূমিকা রয়েছে। অভিযোগ আছে, বজলুর রশীদ মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে নজরুল ইসলামকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগরে নিয়ে আসেন। একজন কারা কর্মকর্তা জানান, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলার সময় পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের তৎকালীন কেন্দ্রীয় কারাগারে গ্রেনেড পাওয়া যায়। ওই সময় কেন্দ্রীয় কারাগারের গোয়েন্দা কারারক্ষীর দায়িত্বে ছিলেন নজরুল ইসলাম। তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের নির্দেশে কারাগারের ভিতরে থাকা বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভেঙে ফেলেন এই নজরুল ইসলাম। এরপর দীর্ঘদিন তাকে ঢাকার বাইরেই রাখা হয়। বজলুর রশীদ সম্প্রতি তাকে হঠাৎ করেই প্রধান কারারক্ষী হিসেবে কেরানীগঞ্জে পোস্টিং দেওয়ায় কারা কর্মকর্তাদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

সর্বশেষ খবর